ধস: গিদ্দাপাহাড় থেকে গয়াবাড়ি যাওয়ার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
টানা বৃষ্টি চলছেই দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড় জুড়ে। পাহাড়ি রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে কিছু জায়গায় রাস্তা অনেকটাই ধসে গিয়েছে। আরও কিছু এলাকায় ধসের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রয়েছে। রাস্তা ধসে গেলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন পাহাড়বাসীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে জিটিএ এবং জেলা প্রশাসনের তরফে কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রায় টানা বৃষ্টির ফলে রাস্তা মেরামতে সমস্যা হচ্ছে। তিনধারিয়া, গয়াবাড়ি, রংটং এলাকায় ধসের ফলে টয়ট্রেনের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এনজেপি-দার্জিলিং ট্রেন পরিষেবা এ দিনও বন্ধ রাখা হয়। শিলিগুড়িতে অবশ্য সকালের বৃষ্টি কমেছে। তবে সারাদিনই মেঘলা ছিল। সন্ধ্যার পর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়। আগামী কয়েক দিন পাহাড়ে টানা বৃষ্টি চলবে বলে জানায় আবহাওয়া দফতর।
এই পরিস্থিতিতে জিটিএ-র তরফে সোমবারই নির্দেশিকা জারি করে বিভিন্ন দফতরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। রাস্তা সাফাই, গাছ সরানো, বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টায় বিভিন্ন শাখার অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন জিটিএ-র প্রধান সচিব। একই ভাবে দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা প্রশাসনের তরফে বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে। এখনও অবধি পাহাড়ে জাতীয় সড়ক কোথাও বন্ধ হয়নি। রোহিণী রোড, সিকিম-কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে কিছু এলাকায় মাটি, কাদা পাহাড় থেকে পড়লেও রাস্তা খোলাই রয়েছে।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় ছোট, মাঝারি ধসের খবর মিলেছে। প্রত্যেক জায়গাতেই মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। যানবাহন চলছে। কোনও রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।’’
মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি ধস নামে দার্জিলিঙের ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কে। তিনধারিয়া, রংটং, গয়াবাড়ি এলাকায় বড় ধস নেমেছে। পাথর, কাদা মাটি, গাছ পড়ে রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। গয়াবাড়ির কাছে রাস্তার কয়েকশো মিটার জায়গায় প্রায় ৯০ শতাংশ ধসে গিয়েছে। হেঁটে লোকজন এলাকাগুলি দিয়ে পার হলেও গাড়ি চলছে না। টয়ট্রেনের লাইন কাদামাটিতে চাপা পড়েছে। আগামী ১-২ দিনের মধ্যে লাইন পরিষ্কার করে ট্রেন চালানো সম্ভব কি না, তা নিয়ে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলে’র কর্তৃপক্ষ সন্দিহান।
এ ছাড়া গিদ্দাপাহাড় থেকে গয়াবাড়ির বাইপাস রোডের একাংশ ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেমনিই, সিংতাম চা বাগিচা এলাকার গোপালধারাতে কয়েক দিন আগে তৈরি রাস্তা ভাঙতে শুরু করায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। রাস্তার পাশের গার্ডওয়ালও ধসের জেরে ভেঙেছে। বিজনবাড়ির ঝেপি থেকে বাদরে এবং লিংটন রোডে রাস্তার মাঝখান দিয়ে জল বইছে। তাতে রাস্তার নীচে জল ঢুকে রাস্তা ভাঙা শুরু হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে জলাপাহাড় এলাকার একটি রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ। পাহাড়ের খাঁজ দিয়ে অবিরাম জল আসতে থাকায় আলুবাড়ি এবং সুনারবস্তিতে ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের হিসেবে সোমবার থেকে শিলিগুড়িতে ৮১ মিলিমিটার, দার্জিলিঙে ১০১ মিলিমিটার, কালিম্পঙে ৬০ মিলিমিটার এবং জলপাইগুড়িতে ৩৫ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতি আরও ৪৮ ঘণ্টা বহাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy