রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল কুড়মি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বিরবাহা। অভিযোগ, শুক্রবার অভিষেকের কনভয় ঝাড়গ্রামের শালবনিতে ঢুকতেই কয়েকটি গাড়িতে হামলা হয়। তার মধ্যে বিরবাহার একটি গাড়ি ছিল। এই ঘটনার পর বিরবাহা বলেন, ‘‘আমিও নিজে আদিবাসী সমাজের মানুষ। কিন্তু এ ভাবে আন্দোলন হয় নাকি! আমরাও আন্দোলন করেছি। কিন্তু এটা অসভ্যতা। এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’
শুক্রবার ঝাড়গ্রাম শহরে নবজোয়ার কর্মসূচির রোড শো শেষ করে লোধাশুলি হয়ে অভিষেকের কনভয় যখন শালবনি যাচ্ছিল, তখনই ঘটনাটি ঘটে। ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের দু’ধারে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুড়মি আন্দোলনকারীরা। অভিযোগ, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের উদ্দেশে ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়। এর পর তৃণমূল নেতার কনভয়ের শেষে থাকা বিরবাহার গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইটও। এতে মন্ত্রীর গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে গিয়েছে। তৃণমূলের আরও অভিযোগ, দলীয় কর্মীদেরও বাঁশ, লাঠি দিয়ে মারা হয়।
কুড়মিদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে সিপিএম এবং বিজেপিকেও দায়ী করেছেন বিরবাহা। তিনি বলেন, ‘‘কুড়মিরা যে আন্দোলন করছেন, তৃণমূল তো কোনও দিন তার বিরোধিতা করেনি। তা হলে কেন তৃণমূলের কর্মসূচিতে হামলা চালানো হবে? এটা কোনও জাতিগত আন্দোলন হতে পারে না। এটার সঙ্গে বিজেপি আর সিপিএমও জড়িত। নোংরামি ছাড়া কিছুই নয়।’’
বর্তমানে ওবিসি শ্রেণিভুক্ত কুড়মি সম্প্রদায় দীর্ঘ দিন ধরে তফসিলি জাতির স্বীকৃতি আদায়ের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তফসিলি জাতি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কুড়মিদের কয়েকটি সংগঠন রাজনৈতিক দলগুলির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে। সম্প্রতি লালগড়ের ধরমপুরে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ কুড়মিদের একটি সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বাঁকুড়ায় ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’র যাত্রা শুরুর আগেই আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা অভিষেকের যাত্রাপথে নিজেদের দাবির সমর্থনে স্লোগান দেবেন। কিন্তু সিবিআইয়ের তলব পেয়ে গত সপ্তাহে শুক্রবার দলীয় কর্মসূচি কাটছাঁট করে বাঁকুড়া ছেড়ে কলকাতায় ফিরতে হয় অভিষেককে। শনিতে কেন্দ্রীয় সংস্থার দফতরে হাজিরা দেওয়ার পর সোমবার আবার জেলায় ফিরে নবজোয়ারে যোগ দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার সেই কর্মসূচিতে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে গিয়ে দফায় দফায় কুড়মিদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে অভিষেকের কনভয়কে।
সিমলাপাল থেকে খাতড়া যাওয়ার পথে বনকাটা ও জামদা গ্রামে তৃণমূল সাংসদের কনভয়ের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। খাতড়া ঢোকার মুখে জামদা গ্রামের কাছে কনভয় আটকানো হলে গাড়ি থেকে নেমে কুড়মি নেতাদের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলেছিলেন অভিষেক। জামদায় অভিষেকের সঙ্গে কথা বলার পর কুড়মি নেতারা তাঁকে জানান, অবিলম্বে তাঁদের দাবি মেনে কেন্দ্রের কাছে সংশোধিত সিআরআই রিপোর্ট পাঠাতে হবে রাজ্য সরকারকে। নইলে আগামী নির্বাচনে কুড়মি সম্প্রদায়ের ভোট রাজ্যের শাসকদলের পক্ষে যাবে না। কুড়মিদের এই হুঁশিয়ারির মুখে অভিষেকও পাল্টা জানিয়েছিলেন, কুড়মি সম্প্রদায় এমনিতেই শাসক তৃণমূলকে ভোট দেয় না। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট দিলে আমরা পুরুলিয়ায় ২ লক্ষের বেশি ভোটে হারতাম না। পুরুলিয়ার ৯টি আসনের মধ্যে ৬টি আমাদের হাতে নেই। আমি এখানে ভোটের রাজনীতি করতে আসিনি। যদি তাই হত, তা হলে গাড়ি থেকে নেমে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতাম না।’’ সেই সময় অভিষেকের থেকে সাহায্যের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নিয়েছিলেন কুড়মিরা। এ বার তৃণমূল নেতার কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘটল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy