Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

শহর জুড়ে আধুনিক ফুট-ওভারব্রিজের ভাবনা

ফুট-ওভারব্রিজে উঠতে পথচারীদের আর কষ্ট করে সিঁড়ি ভাঙতে হবে না। বরং ওঠা যাবে এসক্যালেটরের সাহায্যে। তবে নামতে হবে সিঁড়ি দিয়েই। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের দশটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দেশপ্রিয় পার্ক, সাউথ সিটির সামনে, পার্ক স্ট্রিট এবং এ জে সি বসু রোডের মোড়, গড়িয়া মোড়, গড়িয়াহাট ফ্লাইওভারের কাছে, আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে, লর্ডসের মোড়, বাঙুর হাসপাতালের সামনে, মৌলালি মোড় এবং রাজাবাজার মোড়ে তৈরি হচ্ছে এমন ফুট-ওভারব্রিজ।

সরে যাবে পার্ক সার্কাসের এই ফুট ওভারব্রিজ।  —ফাইল চিত্র।

সরে যাবে পার্ক সার্কাসের এই ফুট ওভারব্রিজ। —ফাইল চিত্র।

জয়তী রাহা
শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০১:১২
Share: Save:

ফুট-ওভারব্রিজে উঠতে পথচারীদের আর কষ্ট করে সিঁড়ি ভাঙতে হবে না। বরং ওঠা যাবে এসক্যালেটরের সাহায্যে। তবে নামতে হবে সিঁড়ি দিয়েই। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের দশটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দেশপ্রিয় পার্ক, সাউথ সিটির সামনে, পার্ক স্ট্রিট এবং এ জে সি বসু রোডের মোড়, গড়িয়া মোড়, গড়িয়াহাট ফ্লাইওভারের কাছে, আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে, লর্ডসের মোড়, বাঙুর হাসপাতালের সামনে, মৌলালি মোড় এবং রাজাবাজার মোড়ে তৈরি হচ্ছে এমন ফুট-ওভারব্রিজ। এ ছাড়াও সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউয়ের উপরে একটি শপিং মলের সামনে তৈরি হচ্ছে আরও একটি ফুট-ওভারব্রিজ। পার্ক সার্কাস চার নম্বর সেতুর কাছের ব্রিজটি অবশ্য উড়ালপুলের কাজ চলার কারণে সরিয়ে বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে আনা হবে।

পুরসভা সূত্রে খবর, পথচারীদের স্বার্থে গত কয়েক বছরে শহরে তৈরি হয়েছে প্রায় ডজনখানেক ফুট-ওভারব্রিজ। কিন্তু এর মধ্যে অনেকগুলিই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। উল্টোডাঙার কাছে সিআইটি রোডে অব্যবহৃত ফুট ওভারব্রিজ বিপজ্জনক ভাবে থাকায় সম্প্রতি পুরসভা সেটিতে ওঠার পথ বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয় একটি স্কুলের পড়ুয়াদের পারাপারের জন্যে রাজাবাজারে তৈরি হওয়া ফুট-ওভারব্রিজটিও বর্তমানে ঝুপড়িবাসী আর নেশাখোরদের দখলে। শিয়ালদহের ফুট-ওভারব্রিজটিও সে ভাবে ব্যবহার করেন না পথচারীরা। পার্ক সার্কাস চার নম্বর সেতুর কাছের ওভারব্রিজে রয়েছে লিফটের সুবিধা। কিন্তু লোকসংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম। এসক্যালেটর থাকা সত্ত্বেও একই অবস্থা গড়িয়াহাটের ফুট-ওভারব্রিজটিরও। পথচারীদের যুক্তি, এসক্যালেটর এবং লিফ্ট বেশির ভাগ সময়ে বন্ধ থাকে। প্রত্যেকের পক্ষেই এতটা সিঁড়ি ভেঙে ওঠা কষ্টকর এবং সময়সাপেক্ষ। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার এর থেকে ‘সুবিধাজনক’ বলে মনে করছেন তাঁরা।

পথচারীদের অভিযোগ, এ শহরে মূলত বিজ্ঞাপন ঝোলানোর খাঁচা হিসেবেই ফুট-ওভারব্রিজের ব্যবহার। নাগরিকদের পরিষেবা দিতে উৎসাহী নয় বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি।

তবে ফুট-ওভারব্রিজ ব্যবহারে শহরবাসীর এই অনীহার ছবিটা এ বার বদলাবে বলে মনে করছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (ইঞ্জিনিয়ারিং) অতীন ঘোষ এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক দিলীপ আদক। অতীনবাবু জানান, নতুন ওভারব্রিজে ওঠার জন্য শুধু এসক্যালেটর থাকবে। ফলে বিজ্ঞাপন সংস্থা চাইলেও ব্যস্ত সময়ে সেটি বন্ধ রাখতে পারবে না। টেন্ডারের নির্দেশিকায় এই বিষয়টি খুব স্পষ্ট করে উল্লেখও করা থাকবে। যদি কোনও কারণে বিজ্ঞাপন সংস্থা নিয়ম না মানে তখন কড়া পদক্ষেপ করবে পুরসভা। দিলীপবাবুর কথায়, “পুরসভার পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ পথচারীদের ফুট-ওভারব্রিজ ব্যবহারে সচেতন করার চেষ্টা করবে। তবে ওঠার একমাত্র মাধ্যম এসক্যালেটর হলেই অনেকেই এর ব্যবহারে আগ্রহী হবেন।”

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এগুলি তৈরি হচ্ছে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি মডেলে)। ফলে পুরসভার পকেট থেকে কোনও খরচা হচ্ছে না। টেন্ডার ডেকে বিভিন্ন সংস্থাকে ফুট-ওভারব্রিজ তৈরির বরাত দেওয়া হবে। ৩০ বছরে জন্য সংস্থা সেখানে বিজ্ঞাপন দিয়ে আয় করতে পারবে। এ জন্য বছরে পুরসভাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, “দেশপ্রিয় পার্ক, গড়িয়াহাট এবং সাউথ সিটির সামনে ফুট-ওভারব্রিজ তৈরির জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ। চুক্তি-প্রক্রিয়া বাকি। আগামী মাসেই কাজ শুরু হবে। পুজোর আগেই বাকিগুলির কাজ শুরু হবে। শেষ হতে ছ’মাস লাগবে। এক একটি তৈরিতে খরচ পড়ছে সাড়ে তিন থেকে চার কোটি টাকা। চার নম্বর সেতুর কাছের ওভারব্রিজটির জন্য পূর্ববর্তী পুরবোর্ডকে বিজ্ঞাপন সংস্থা বছরে যে টাকা দিত আমরা তার বারো গুণ আদায় করেছি। অন্যান্যগুলি থেকেও পুরসভা অনেক বেশি টাকা আদায় করবে।”

অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা ফুট-ওভারব্রিজগুলো সরানো নিয়ে অবশ্য অতীনবাবু জানান, ওগুলি পুরসভার নয়। বাম জমানায় টেন্ডার ছাড়াই নিয়ম না মেনে তৈরি হয়েছে। একটি সরানোর ব্যাপারে স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটির সঙ্গে এক দফা কথা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।

অন্য বিষয়গুলি:

jayati raha foot over bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE