Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

বিদ্রোহে প্রবাসী শিল্পী, অ্যাকাডেমিতে হাজির পেইন্টিং-এর নয়া ঘরানা

চারুকলায় ডিজিটাল কারসাজি তাঁর এক্কেবারে না-পসন্দ্। কিন্তু, ছবি আঁকার জন্য অনেক শিল্পীই আজকাল ক্যানভাসের বদলে কম্পিউটার স্ক্রিনে বেশি স্বচ্ছন্দ। চারুকলার উঠোনে প্রযুক্তির এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধেই সম্বিৎ সেনগুপ্তর বিদ্রোহ। তা থেকেই জন্ম শিল্পের নতুন ঘরানার। নাম ‘জেশ্চারিজম’। কলকাতার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে ছবি ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী।

সম্বিত্ সেনগুপ্তের ছবি ‘সার্ডিনিয়ান র‌্যাপসডি’।—নিজস্ব চিত্র।

সম্বিত্ সেনগুপ্তের ছবি ‘সার্ডিনিয়ান র‌্যাপসডি’।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১০:৩৬
Share: Save:

চারুকলায় ডিজিটাল কারসাজি তাঁর এক্কেবারে না-পসন্দ্। কিন্তু, ছবি আঁকার জন্য অনেক শিল্পীই আজকাল ক্যানভাসের বদলে কম্পিউটার স্ক্রিনে বেশি স্বচ্ছন্দ। চারুকলার উঠোনে প্রযুক্তির এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধেই সম্বিৎ সেনগুপ্তর বিদ্রোহ। তা থেকেই জন্ম শিল্পের নতুন ঘরানার। নাম ‘জেশ্চারিজম’।
কলকাতার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে ছবি ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী। গভর্নমেন্ট কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফটসের ১৫০ বছর পূর্তি উৎসবের সমাপ্তি উপলক্ষে এই আয়োজন। চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত। কলেজের প্রাক্তনী সম্বিৎ সেনগুপ্তর কাজ প্রদর্শনীতে আলাদা করে চোখ টানছে।
নিজের একটিই মাত্র ছবি তিনি প্রদর্শনীতে এনেছেন। কিন্তু, সেই একটিকেই একুশটি ছবিও বলা যায়। ২১টি আলাদা আলাদা ব্লকে বিভিন্ন ছাঁদের রঙের খেলা। ব্লকগুলি একই মাপের। তিনটি করে ব্লক পাশাপাশি বসিয়ে মোট সাতটি সারি। গোটা ইনস্টলেশনকে একত্রিত করে দেখলে জলপাই গাছের আদল ফুটে ওঠে, গোড়ায় ভগ্নপ্রায় সমাধি ক্ষেত্র। সম্বিৎ বললেন, “ছবিটার নাম সার্ডিনিয়ান র‌্যাপসডি। ইতালির সার্ডিনিয়া দ্বীপে চার হাজার বছরের পুরনো এক ধ্বংসপ্রাপ্ত সভ্যতার নিদর্শন থেকে প্রাণিত।”
যে ২১টি ব্লক নিয়ে এই ইনস্টলেশন, সেগুলিকে উল্টোপাল্টা করে সাজিয়ে দিলেও শিল্পের কোনও ক্ষতি হয় না। ফুটে ওঠে চোখ জুড়োনো অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট। আবার যে কোনও ব্লককে ইনস্টলেশন থেকে বিচ্ছিন্নও করা যায়। প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা ভাবে ছবি হয়ে উঠতে সক্ষম। ছবির মধ্যে এই গতিশীলতাই প্রখ্যাত ‘প্যাকেজিং গুরু’ তথা প্রবাসী বাঙালি চিত্রী সম্বিতের সবচেয়ে কাঙ্খিত অনুভূতি। জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই প্যারিসে কাটানো সম্বিৎ বললেন, “এটা একটা নতুন ধারা। আমিই এনেছি। নাম জেশ্চারিজম।” কী এই ‘জেশ্চারিজম’? প্রবাসী বাঙালি শিল্পীর ব্যাখ্যা, “গতিই জীবন। শিল্পে গতিশীলতা না থাকলে জীবনের স্পর্শ থাকে না। ছবিতেও যে অন্তর্নিহিত গতি থাকতে পারে, এই নতুন ইনস্টলেশন তা প্রমাণ করছে।”
শিল্পীর কথায়, সৃষ্টিশীল কাজের কোনও প্রতিলিপি হয় না। যে কোনও ছবিই মৌলিক সৃষ্টি। ডিজিটাল আর্টের নামে যা হচ্ছে, তা আর যা-ই হোক, মৌলিক সৃষ্টি হতে পারে না। তার অসংখ্য প্রতিলিপি তৈরি সম্ভব। একটি প্রকৃত ছবির প্রতিটি অংশই মৌলিকভাবে তৈরি হয়। এই ছবির ২১টি আলাদা আলাদা ব্লকে সেই মৌলিকত্বকেই ধরা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy