বেপরোয়া ‘অটোরাজ’-এর মধ্যেই বিপরীত নজির মহানগরে।
এক দিকে, রীতিমতো লিফলেট বিলি করে অটোচালকদের সচেতন করার কাজ শুরু করেছে টালিগঞ্জ-গড়িয়া রুটের অটোচালক ইউনিয়ন। অন্য দিকে, ‘চালক ও যাত্রীদের দায়িত্ব ও অধিকার’ নিয়ে সচেতন করতে লিফলেট বিলি করা শুরু করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব উইমেন স্টাডিজ’।
কলকাতায় অটোর দৌরাত্ম্য সামলাতে নাজেহাল প্রশাসন। কখনও যাত্রীদের সঙ্গে বচসার জেরে মারমুখী অটোচালক, কখনও ইচ্ছেমতো রুটে যাওয়ার অভিযোগ। দৌরাত্ম্যের বহর এমনই যে রাজ্যের মন্ত্রীকেও রাস্তায় নেমে হেঁটে দফতরে যেতে হয়েছে। মন্ত্রীর অভিযোগেও সমস্যা মেটেনি।
সেই বেপরোয়া অটোচালকদেরই শাসনে আনতে কড়া হলেন টালিগঞ্জ-গড়িয়া অটো ইউনিয়নের নেতারা। সংগঠনের এক নেতার কথায়, “কাটা-রুটে চলা আর যাত্রীদের সঙ্গে অভদ্র ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে আমাদের নাজেহাল অবস্থা হত। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই আমরাই উদ্যোগী হয়েছি।” ইউনিয়নের তরফে প্রথমে লিফলেট ছাপানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, অটোচালকদের বিরুদ্ধে দৌরাত্ম্য, কাটা রুটে চালানোর অভিযোগ উঠলে সেই চালকের পাশে দাঁড়াবে না ইউনিয়ন।
সংগঠনের নেতা বিতান হালদার বলেন, “আমরাই রাস্তায় নেমে যাত্রীদের সমস্যা দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছি। এই রুটে বাইরের কিছু অটো নিয়মিত ভাড়া খাটত। পুলিশকে বলে সে সবও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” এতে ফল মিলেছে বলে জানাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
অন্য দিকে, প্রচারপুস্তিকা বিলি করে অটোচালক ও যাত্রী উভয়কেই সচেতন করতে নেমেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব উইমেন স্টাডিজ’ও। রোজা-লুুক্সেমবার্গ-স্টিফটুঙ্গ-এর সঙ্গে একযোগে অটোচালকদের উপরে দীর্ঘদিন ধরেই সমীক্ষা চালিয়েছে তারা। তারই প্রথম পদক্ষেপ ওই প্রচার পুস্তিকা। তাতে অটোচালকদের কর্তব্য ও যাত্রীদের অধিকার নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সমীক্ষায় গবেষণা উপদেষ্টা নব দত্ত বলেন, “আমরা কলকাতার ৬৪টি অটো রুটে সমীক্ষায় দেখেছি যাত্রী ও চালক, উভয়েই অটো সম্পর্কিত নানা আইন সম্পর্কে সচেতন নন। সে কারণেই এই পুস্তিকা বিলির সিদ্ধান্ত।”
নববাবু জানান, বাংলা, হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজিতে ওই প্রচারপুস্তিকা শহর জুড়েই বিলি করা হচ্ছে। সম্প্রতি বিভাগের পক্ষ থেকে অটোচালকদের নিয়ে একটি আইনি সচেতনতা শিবিরেরও আয়োজন হয়েছে। নববাবু বলেন, “অটোচালকদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করে। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে পদক্ষেপ করতে হবে, তা জানতেই আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনায় বসানো হবে চালকদের।”
তবে সমীক্ষা বা ইউনিয়নের সদর্থক পদক্ষেপ হলেও অটোরাজ আদৌ কমবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন পরিবহণ দফতরের কর্তাদের একাংশ। দফতরের এক কর্তা বলেন, “পুলিশের তরফে আগেও অটোচালকদের নিয়ে অনেক শিবির করা হয়েছে। এখনও হচ্ছে। তাতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা টালিগঞ্জ-গড়িয়া ইউনিয়নের উদ্যোগও তাই কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy