কেন্দ্রের সাহায্য না মেলায় রাজ্যে উন্নয়নের কাজ আটকে রয়েছে বলে বারবারই অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পরিবহণ দফতরের একাংশ এ ব্যাপারে ভিন্নমত। ওই দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সহায়তায় এ রাজ্যে প্রথম গাড়ি পরীক্ষার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা শুরু হতে চলেছে কলকাতায়। ওই ব্যবস্থার পরিকাঠামো থেকে যন্ত্রপাতি, সব কিছুই হচ্ছে কেন্দ্রের টাকায়। রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হচ্ছে জমি এবং সড়ক-পরিকাঠামো।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, প্রায় ১৫ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সহায়তায় আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই তৈরি হবে ওই স্বয়ংক্রিয় গাড়ি পরীক্ষা কেন্দ্র বা সার্টিফিকেট অব ফিটনেস (সিএফ) কেন্দ্র। বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের পাশে পরিবহণ দফতরের কয়েক একর জমি রয়েছে। সেখানেই কেন্দ্রটি তৈরির কাজ চলছে। একই সঙ্গে ওই জমিতে পিভিডি (পাবলিক ভেহিক্লস ডিপার্টমেন্ট)-এর একটি শাখা খোলা হচ্ছে। থাকছে লাইসেন্সিং পরীক্ষা কেন্দ্রও। তবে ওই জমির বেশির ভাগ অংশই ব্যবহৃত হবে স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা কেন্দ্রের কাজে।
শুধু গাড়ি পরীক্ষা কেন্দ্র গড়াই নয়, তার যাবতীয় পরিকাঠামোও দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। কলকাতার ক্ষেত্রে এই পরিকাঠামো দিচ্ছে কেন্দ্রের অধীনে পুণের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব রোড ট্রান্সপোর্ট। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, “স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করে প্রথম দু’বছর তার দেখভাল করবে কেন্দ্রীয় ওই সংস্থা। তার পরে ধীরে ধীরে আমাদের দফতরের কর্মীরা ওই ব্যবস্থা রপ্ত করে নিলে দু’বছর পর থেকে তা চালাবে রাজ্য সরকারই।”
বর্তমানে গাড়ির সার্টিফিকেট অব ফিটনেস পরীক্ষা নিয়ে অনেক সময়েই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে পরিবহণ দফতরে। নয়া স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু হলে এমন অভিযোগ অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন দফতরের শীর্ষ কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, “হাতে-কলমে গাড়ির ধোঁয়া এবং অন্যান্য বিষয় পরীক্ষা করতে গিয়ে পরীক্ষক চাইলেই নানা কারচুপি করতে পারেন। নতুন পদ্ধতিতে সেই সুযোগ কার্যত থাকছেই না।”
কেমন হবে স্বয়ংক্রিয় ওই ব্যবস্থা? পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, পুরো ব্যবস্থাটিই হবে কম্পিউটার-পরিচালিত। একটি বড় মাঠকে তিন-চারটি লেনে ভাগ করা হবে। সেগুলিতে গাড়ির উপরে নজরদারির জন্য কয়েকটি যন্ত্র লাগানো থাকবে। ওই যন্ত্রগুলি পরিচালনের জন্য মূল কেন্দ্রে থাকবে একটি কম্পিউটার। কোনও গাড়ি ওই লেনের মধ্যে গেলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে গাড়ির নানা খুঁটিনাটি তথ্য মূল কম্পিউটারের মধ্যে চলে আসবে। সেগুলি এক জায়গায় করে মাপকাঠি অনুযায়ী ওই কম্পিউটারটি জানিয়ে দেবে, গাড়িটি পরীক্ষায় পাশ করেছে কি না।
কী হবে ফেল করলে?
পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, “পরীক্ষায় ফেল করলে দফতরের নির্দিষ্ট করে দেওয়া কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে গাড়ির প্রয়োজনীয় মেরামতি করতে হবে। তার পরে ফের পরীক্ষায় বসতে হবে ওই গাড়িকে।” ওই কর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে কলকাতায় অন্তত ১৪টি এ রকম মেরামতি কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এগুলি সবই হবে বেসরকারি উদ্যোগে। পরে ওই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy