Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

কাউন্সিলরদের প্রার্থী না-করার ‘ঝুঁকি’ নিতে চাইছে না তৃণমূল

সংরক্ষণের বাধা না থাকলে এ বার দলের সব কাউন্সিলরকে ফের প্রার্থী করার ভাবনা ছিল তৃণমূলের। কিন্তু সংরক্ষণের কোপে তৃণমূলের জেতা বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রার্থী মনোনয়নে চিন্তা বেড়েছে দলের। এমনিতেই সারদা কাণ্ডে ‘বিধস্ত’ দল, তার উপরে দলের মধ্যে বিভাজনের বাতাবরণ নিয়ে চিন্তায় দলীয় নেতারা। সে দিকে খেয়াল রেখেই তৃণমূল নেতৃত্ব বর্তমান কাউন্সিলর বদলানোর ঝুঁকি নিতে ততটা আগ্রহী নন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৯
Share: Save:

সংরক্ষণের বাধা না থাকলে এ বার দলের সব কাউন্সিলরকে ফের প্রার্থী করার ভাবনা ছিল তৃণমূলের। কিন্তু সংরক্ষণের কোপে তৃণমূলের জেতা বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রার্থী মনোনয়নে চিন্তা বেড়েছে দলের।

এমনিতেই সারদা কাণ্ডে ‘বিধস্ত’ দল, তার উপরে দলের মধ্যে বিভাজনের বাতাবরণ নিয়ে চিন্তায় দলীয় নেতারা। সে দিকে খেয়াল রেখেই তৃণমূল নেতৃত্ব বর্তমান কাউন্সিলর বদলানোর ঝুঁকি নিতে ততটা আগ্রহী নন। আসলে দলের মধ্যে আর বিদ্রোহের সুযোগ দিতে চান না তাঁরা। ইতিমধ্যে অবশ্য বনগাঁ এবং কৃষ্ণগঞ্জের উপনির্বাচন দলকে সাফল্য দিয়েছে। তা সত্ত্বেও আসন্ন কলকাতা পুরভোটে শহরের নাগরিকদের মতিগতি নিয়ে খুব একটা স্বস্তিতে নেই তৃণমূল। প্রার্থী বাছাইয়ের পর্বে তাই পুরনো কাউন্সিলরদের ধরে রাখতেই বেশি নজর দিতে চায় পুর-নির্বাচনের জন্য গঠিত তৃণমূলের বিশেষ নির্বাচন কমিটি। সোমবার কমিটি সূত্রে এ কথা জানা গিয়েছে। কলকাতার পুরভোটের জন্য সম্প্রতি ওই বিশেষ নির্বাচন কমিটি গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার চেয়্যারম্যান করা হয়েছে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। কমিটির অন্য সদস্যেরা হলেন সুব্রত বক্সী, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, শশী পাঁজা, সাধন পাণ্ডে-সহ কলকাতার বিধায়কেরা। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই কমিটির প্রথম বৈঠক হয়।

তৃণমূল সূত্রের খবর, আসন্ন পুরভোটে দলের সিংহভাগ কাউন্সিলরকে ফের প্রার্থী করা হবে। তবে যে সমস্ত ওয়ার্ড মহিলা এবং তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত, সেগুলির কাউন্সিলরদের কেউ কেউ এ বার অন্যত্র দাঁড়ানোর সুযোগ না-ও পেতে পারেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে পুরুষ কাউন্সিলরের ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হলে সেই কাউন্সিলরের স্ত্রী বা মেয়েকে দাঁড় করানোর রেওয়াজ আছে।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ২,৫,৮... পদ্ধতিতে ভোট হওয়ায় বেশ কয়েক জন কাউন্সিলরের (পুরুষ) ওয়ার্ড মহিলা-সংরক্ষণের আওতায় এসেছে। কয়েকটি ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়েছে তফসিলি জাতির জন্য। এ সবের কারণেই সংরক্ষিত হয়েছে বর্তমান তৃণমূল বোর্ডের দুই মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার এবং স্বপন সমাদ্দারের ওয়ার্ড। দেবব্রতবাবু বর্তমানে ৯৭ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাঁকে তাঁর পুরনো জায়গা ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হতে পারে। দলীয় সূত্রের খবর, দেবব্রত ওরফে মলয় মজুমদার বর্তমান পুর-বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ মেয়র পারিষদ। এ বার নির্বাচনে কলকাতা পুরসভার সাফল্য নিয়ে যে ইস্তাহার তৈরি হচ্ছে, তাতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন ৬ বছর আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মলয়বাবু। তাঁর পরামর্শ পুর-পরিচালনায় জরুরি বলে মনে করছে বিশেষ নির্বাচন কমিটি।

অন্য দিকে, বছরখানেক হল বস্তি দফতরের মেয়র পারিষদের দায়িত্ব পেয়েছেন স্বপনবাবু। প্রথম তিন বছরে বস্তি নিয়ে ততটা উন্নয়ন করা যায়নি বলেই মনে করছে পুর-বোর্ড। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বপনবাবুকে ওই দায়িত্বে আনা হয়। বস্তির উন্নয়নে এ বার বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে বলে দাবি মেয়রের। স্বপনবাবু ৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বরাবরই জিতে আসছেন। এ বার ওই ওয়ার্ডটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় তাঁকে অন্য ওয়ার্ডে দাঁড় করানো হতে পারে। পুরসভা সূত্রের খবর, ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্ভুনাথ কাও জেলে যাওয়ার পর থেকেই তাঁর ওয়ার্ডটি দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্বপনবাবুকে। সেখানেই এ বার প্রার্থী হতে পারেন স্বপনবাবু বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। তবে তৃণমূল পুর-বোর্ডের বরো চেয়ারম্যান, ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দুর্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাম পেয়ারি রামের আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। তাঁদের এ বার প্রার্থী করা হবে কি না স্পষ্ট নয়। কমিটির চেয়ারম্যান মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভোটের প্রস্তুতি চলছে। প্রার্থী নিয়ে সে ভাবে আলোচনা হয়নি।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE