শুধু টালা ট্যাঙ্ক সংস্কার নয়, শহরকে ভ্যাটমুক্ত করার কাজেও কেন্দ্রের কাছে ধাক্কা খেল কলকাতা পুরসভা। অনিশ্চয়তায় নিউ টাউনের প্রস্তাবিত ডাম্পিং গ্রাউন্ডও। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে জেএনএনইউআরএম আগেই আর্থিক সহায়তার অনুমোদন দিয়েছিল। কোনও কোনও কাজ শুরুও হয়েছে। এর মধ্যেই দিল্লির নতুন সরকার জানিয়ে গিয়েছে, ওই প্রকল্পে কোনও টাকা দেওয়া যাবে না। শুক্রবার সেই বার্তা পৌঁছতেই আশাহত পুর-প্রশাসন। তবে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে তাঁরাও যে দমবার পাত্র নন, তা এ দিন সাফ জানিয়ে দেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “ওই দু’টি প্রকল্পে প্রায় ১৫২ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এখন নিজেদের তহবিল থেকে খরচ করে ওই সব প্রকল্প বাস্তবায়িত করব।”
এ দিকে, সরকার বদলের পরে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের কাজে অর্থ বরাদ্দ বাতিল করার ঘটনার পিছনে বিজেপি-র রাজনৈতিক ‘অভিসন্ধি’ রয়েছে বলে মনে করছেন মন্ত্রী, মেয়র-সহ সরকারি আমলারা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ১১০০ কোটি টাকা সহায়তার ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁর কথায়, “এখন ওঁরা বলছেন, তা দেওয়া যাবে না। এতে চরম অসুবিধেয় পড়বে চালু প্রকল্প গুলি।”
পুরসভা সূত্রের খবর, ধাপা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আর জায়গা নেই। তাই নিউ টাউনে জঞ্জাল ফেলার নতুন মাঠের জন্য জমি দেয় সরকার। তা গড়ে তুলতে ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প করে পুরসভা। পরে সেই রিপোর্ট পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। প্রকল্প পাশও করে কেন্দ্র। শতর্র্ অনুযায়ী মোট খরচের ৩৫ শতাংশ কেন্দ্র, ৩৫ শতাংশ রাজ্য ও বাকি ৩০ শতাংশ দিতে হবে পুরসভাকে। মেয়র জানান, অনেক পরিশ্রম করে, খরচ করে ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে। এখন তা বাতিল হওয়ায় অনেক সময়ও নষ্ট হল।
পুরসভা সূত্রের খবর, পুর-ভোটের আগে শহরকে ভ্যাটমুক্ত করতে স্বয়ক্রিয় কম্পাক্টর স্টেশন গড়ার সিদ্ধান্ত নেন। আপাতত শহরের ৬টি জায়গায় ওই ধরনের স্টেশন রয়েছে। চলতি আর্থিক বছরে আরও ৭৮টি স্টেশন গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুর-প্রশাসন। কেনার কথা ৩৯টি চলমান কম্পাক্টারও। এর জন্য কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তার অনুমোদনও মেলে। মেয়র শোভনবাবু জানান, এর জন্য প্রায় ১১২ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। আপাতত সেই প্রকল্পও বাতিল করেছে কেন্দ্রের নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। এই আবস্থায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পুর-প্রশাসন। মেয়র শোভনবাবু জানান, ওই সব প্রকল্প রূপায়ণের ব্যাপারে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এ নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, রাজ্য সরকার পুরসভাকে ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ দিন বিকেলে খবরটা আসতেই মেয়র পুরসভার অন্যান্য মেয়র পারিষদ ও অফিসারদের নিয়ে এক বৈঠক করেন। পরে মেয়র বলেন, “ওই দু’টি প্রকল্প আমরা রূপায়ণ করবই। পুরসভা তাঁর সীমিত আর্থিক ক্ষমতা দিয়েই তা করবে।” তিনি জানিয়েছেন, সমগ্র প্রকল্পের ভাগিদার হিসেবে পুর-বাজেটে একটি খরচ ধরা হয়েছিল। এখন সেই খরচের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
তবে সহায়তার আশ্বাস দিয়েও যে ভাবে হাত গুটিয়ে নিল কেন্দ্র, তা অন্যায় এবং অগণতান্ত্রিক বলেই মনে করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ এবং মেয়র শোভনবাবুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy