রাজেশ সাউ।
মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গুদাম পরিষ্কার করার পরে দরজার শাটার নামাচ্ছিলেন বাবা। লোহার সেই শাটারেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। প্রতিবেশী এক যুবক ওই দৃশ্য দেখে ছুটে এসে প্রৌঢ়ের পা ধরে টানতে থাকেন। প্রৌঢ় প্রাণে বেঁচে গেলেও ওই যুবক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে খিদিরপুরের কার্ল মার্ক্স সরণিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রাজেশ সাউ (৩৮)। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন। তদন্তকারীরা জানান, দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার কার্ল মার্ক্স সরণির ওই চারতলা পুরনো বাড়িটির আশপাশে বিদ্যুতের প্রচুর তার ঝুলে ছিল। এ দিন ওই বাড়ির ভাড়াটে সঞ্জু সাউয়ের মেজো মেয়ের বিয়ে ছিল। সেই উপলক্ষেই এ দিন দুপুরে নীচের তলার গুদামটি পরিষ্কার করেন সঞ্জুবাবু। গুদাম সাফাইয়ের পরে চেয়ার সাজিয়ে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে শাটার নামাতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে ঝুলে থাকা তার শাটারে লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ায় সঞ্জুবাবুর পিঠ শাটারের সঙ্গে আটকে যায়।
তখনই পাশের ঘর থেকে বেরোচ্ছিলেন আর এক ভাড়াটে রাজেশ সাউ। সঞ্জুর পিঠ শাটারে সেঁটে যাচ্ছে দেখে রাজেশ ছুটে এসে তাঁর পা ধরে টানতে থাকেন। সঞ্জুকে সরাতে পারলেও রাজেশ শাটারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। দু’জনকেই প্রথমে একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে রাজেশকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এ দিন বিকেলে সঞ্জু বলেন, ‘‘আমাকে বাঁচাতে গিয়ে রাজেশ প্রাণ হারাল। কতটা খারাপ লাগছে, বলে বোঝাতে পারব না। এ দিন আমার মেয়ের বিয়েতে রাজেশের পুরো পরিবার আমন্ত্রিত ছিল। সব আনন্দ হঠাৎ নিভে গেল। মেয়ের বিয়ে হবে ঠিকই, কিন্তু সমস্ত জাঁকজমক আমরা বাদ দিয়েছি।’’
এ দিন ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে দাদা অমিত সাউ অফিস থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে চলে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওর স্ত্রী ও তিনটি সন্তান রয়েছে। কী ভাবে ওদের সংসার চলবে, সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।’’
শাটারের পাশে বিদ্যুতের তার কেন ঝুলে ছিল, তা জানতে দক্ষিণ বন্দর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে পুলিশের তরফে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy