শুভ্রা ঘোষদস্তিদার। ফাইল চিত্র।
বেহালায় বৃদ্ধা খুনে জালে কাঠমিস্ত্রি। ধৃত সাহেব পোড়েল কিছু দিন আগে নিহত শুভ্রা ঘোষ দস্তিদারের বাড়িতে কাজ করেছিল। সেই সময়েই কাজের ফাঁকে রেকি করে সাহেব। সাহেবকে গ্রেফতারের পর এমনটাই জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের আরও দাবি, বৃদ্ধা খুনের ওই ঘটনায় সাহেব মূল অভিযুক্ত নয়। সে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা অন্য এক কাঠমিস্ত্রির সঙ্গে সহযোগী হয়ে ওই বাড়িতে কাজে এসেছিল।
খুনের ষড়যন্ত্রে আরও এক চক্রীর হাত রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। অভিযুক্ত সাহেবকে জেরা করে জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতে তাঁরা কাজের বরাত পেয়েছিলেন, সেখানে কাজ করে যাওয়া এক রঙ মিস্ত্রির সুপারিশে।
বেহালা থানার পুলিশ মনে করছে, বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় ওই তিন জনই জড়িত। কারণ, ঘটনার পর থেকে ওই রঙ মিস্ত্রি এবং কাঠমিস্ত্রির মোবাইল সুইচড অফ। তাদের ঠিকানাতেও হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। কিন্তু সেখানে তাদের পাওয়া যায়নি। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, কাজ করার সময় এই তিন চক্রী লক্ষ রাখত কে, কখন ওই বাড়িতে আসছেন। প্রতি দিন, সকাল সাড়ে ন’টার মধ্যে নিয়মিত অফিস যান বৃদ্ধার ছেলে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই স্কুলে চলে যায় তাঁর মেয়েও। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ অফিস চলে যান বৃদ্ধার পুত্রবধূও। পরিচারিকাও কখন আসত তাও খেয়াল রেখেছিল তারা। তদন্তকারীদের অনুমান, ডাকাতির আগে এ সব নিয়মিত রেকি করেছিল সাহেব।
আরও পড়ুন: রেষারেষি দেখলে আজও আতঙ্কে ভোগেন প্রৌঢ়
খুনের দিনও তাই হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার, সাড়ে ১২টা নাগাদ বেহালার শিশিরবাগানে নিজের বাড়িতেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় শুভ্রা ঘোষ দস্তিদারকে। ৭৫ বছর বয়সী শুভ্রা দেবী ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। ঘটনার দিন পরিচারিকা দরজা ধাক্কা দিলেও কোনো সাড়া পাননি। ভিতর থেকেই দরজা বন্ধ ছিল। পরিচারিকা বিষয়টি জানান প্রতিবেশীকে। তিনিও আসেন। কিন্তু বৃদ্ধার সাড়া পাননি। এর পর দু’জনেই সেখান থেকে চলে যান। প্রতিবেশী ফোন করেন বৃদ্ধার ছেলেকে। এর পর যখন তাঁরা ফের বৃদ্ধার বাড়ির সামনে আসেন। তখন দেখেন ঘরের দরজা খোলা। গোয়েন্দাদের অনুমান, যখন ডাকাডাকি করা হচ্ছিল, তখন ঘরেই ছিলেন আততায়ীরা।
গোয়েন্দারা বৃদ্ধার ছেলে-পুত্রবধূকে জেরা করে জানতে পারেন, ভিতর থেকে দরজা বন্ধই থাকত। কেউ ডাকাডাকি করলে, শুভ্রাদেবী জানালা দিয়ে দেখতেন তাঁর পরিচিত কি না। পরিচিত হলে তবেই দরজা খুললেন শুভ্রাদেবী। তা থেকেই তদন্তকারীদের অনুমান, খুনের ঘটনায় পরিচিতরাই রয়েছেন।
আরও পড়ুন: রক্ষীর কাজ ছেড়ে পরিচালনায় ফিরছেন সুব্রত
ওই বাড়ির সামনের রাস্তায় সিসি ক্যামেরা না থাকলেও, তা কিছুটা দূরে ছিল। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে কয়েক জনের গতিবিধি ধরা পড়ে। এ ছাড়া তাদের বাড়িতে সম্প্রতি কোনও কাজ হয়ছিল কি না, তা জানতে চান গোয়েন্দারা। জানা যায় ওই বাড়িতে রঙ এবং কাঠের কাজ হয়েছিল। এই দুটি সূত্র ধরেই সন্দেহ হয় খুনের ঘটনায় মিস্ত্রিরা জড়িত থাকতে পারেন। মূল অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধার বাড়ি থেকে গয়না, হাতের বালা খোয়া গিয়েছে। আলমারি খোলা ছিল। ফলে লুঠের উদ্দেশ্যেই তাঁকে খুন করা হয় বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy