দীপাবলির রাত। রাস্তায় এক মহিলার শ্লীলতাহানি করছে কয়েক জন। মারধর করা হচ্ছে মহিলার স্বামীকে। মহিলাকে গালিগালাজ করা হচ্ছে। সামনে পুলিশও উপস্থিত। অথচ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা তো দূর, উল্টে তাদের পাণ্ডাকে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করে ঘটনাস্থল থেকে নির্বিঘ্নে বের করে দিল পুলিশই। দমদম থানার পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তারা।
পুলিশ জানায়, দমদমের আর এন গুহ রোডে রবিবার রাতে এক মহিলার শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে রাজু দাস নামে এক জনকে ধরা হয়েছে বলে জানান, ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (জোন-২) ধ্রুবজ্যোতি দে।
মহিলার অভিযোগ, রাত দেড়টা নাগাদ তাঁর বাড়ির সামনে মণ্ডপে যাচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বিশ্বজিৎ ওরফে বিশা নামে একটি ছেলে ছিল। মহিলার কথায়, ‘‘সেই সময় এলাকার দুষ্কৃতী রাজু দাস দলবল নিয়ে এসে বিশাকে মারতে শুরু করে। আমি বাধা দিলে ওরা বিশাকে ছেড়ে আমার আর আমার স্বামীর ওপরে চড়াও হয়। রাজা আর গোপাল- এলাকার দুই দুষ্কৃতী ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’’
মহিলা জানান, সেই সময় মণ্ডপের সামনে তিন-চার জন পুলিশ ছিল। পুলিশ ওই দুষ্কৃতীদের ঠেকায়নি? মহিলার অভিযোগ, ‘‘পুলিশ ছিল। পুলিশ বলল গোপালদা আপনি চলে যান। আমরা ব্যাপারটা দেখে নিচ্ছি। গোপাল পুলিশের সামনেই আমাদের খুন করে দেওয়া হুমকি দিল। আমাকে ধর্ষণের হুমকি দিল।’’
মহিলার অভিযোগ, এর পরে গোপাল ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান। ওই ঘটনার পরে তাঁরা থানায় গিয়ে জেনারেল ডায়েরি করান। তার পরে রাতে দমদম থানা থেকে পুলিশের একটি গাড়ি তাঁদের নিরাপত্তার জন্য অবশ্য তাঁদের বাড়ির সামনে পাঠানো হয়। মহিলার কথা সমর্থন করেছেন বড়কালী পুজো মণ্ডপের আশপাশের বাসিন্দাদের অনেকেই।
ওই ঘটনার পরে তাই স্থানীয় মানুষ একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। তাঁদের ক্ষোভ, এক জন মহিলার সঙ্গে অভব্য আচরণ করতে দেখেও পুলিশ কেন ছেড়ে দিল গোপালকে? কর্তব্যরত ওই পুলিশ কর্মীদেরই তো উচিত ছিল থানায় খবর দেওয়া। কেন মহিলাকে থানায় গিয়ে জেনারেল ডায়েরি করানোর পরে পুলিশ আসবে? কেন পুলিশ এক দুষ্কতীকে সমীহ করে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করবে? এতে দুষ্কৃতীরাজ এলাকায় আরও মাথাচাড়া দেবে এমনটাই দাবি নাগরিকদের।
ব্যারাকপুর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘ঘটনায় এক জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কেউ অভিযোগ করে থাকলে, তার তদন্ত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy