আলোকচিত্র দেখার সঙ্গে প্রদশর্নীতে থাকবে জলাভূমি-বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও। ছবি:সংগৃহীত।
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি ‘বিশ্ব জলাভূমি দিবস’। এই বিশেষ দিনটি উপলক্ষে জলাভূমির উপযোগিতার কথা মনে করিয়ে দিতে প্রদর্শনীর আয়োজন কলকাতার বিবাদী বাগের কারেন্সি বিল্ডিংয়ে। একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে ‘জলাভূমির কথা ও কাহিনি’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীর উদ্যোক্তাদের মধ্যে আছে ম্যাক্সমুলার ভবনও।
‘জলাভূমির কথা ও কাহিনি’ আমাদের মনে করিয়ে দিতে চায় পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ জলাভূমির কথা। কার্যত এই জলাভূমি না থাকলে কলকাতার অস্তিত্বই বিপন্ন। কিন্তু এই জলাভূমির অবদান ভুলে গিয়েছে তিলোত্তমার নাগরিক জীবন। আক্ষেপ, ঋষিথ সিন্হার। ঋষিথ যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং ডায়লগস’-এর সঙ্গে। এই সংস্থাটি প্রদর্শনীর অন্যতম উদ্যোক্তা। ঋষিথের কথায়, ‘‘কলকাতায় যে এখনও স্বল্পমূল্যে খাবার পাওয়া যায়, তার বড় কারণ কিন্তু পূর্ব কলকাতার জলাভূমি। এই জলাভূমি থেকে প্রচুর পরিমাণে মাছ পায় কলকাতা। এ ছাড়াও ভেড়ির অনেক উপযোগিতা আছে। কিন্তু তার পরেও রাতের অন্ধকারে ভেড়ি দখল হয়ে যায়। তার পর ভেড়ি বুজিয়ে উঠে যায় বহুতল।’’
কংক্রিটের আড়ালে ভেড়ির মৃত্যুর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতেই ‘জলাভূমির কথা ও কাহিনি’ প্রদর্শনীর আয়োজন। উদ্যোক্তাদের কথায়, আজ, ভেড়ি মানেই বেশির ভাগ কলকাতাবাসীর কাছে তাঁর ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে উপভোগ করার একফালি দৃশ্য। আমরা ভুলেই যাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এর উপযোগিতার কথা। অথচ সারা শহরের বর্জ্য জল এসে পড়ে এই ভেড়িতে। তার পর সেই জল ব্যবহৃত হয় মাছ প্রতিপালন এবং অন্যান্য কাজেও। অর্থনৈতিক দিকের পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতেও এই জলাভূমি জুড়িহীন।
প্রয়োজনীয় এই তথ্যগুলোকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই প্রদর্শনীর আয়োজন। আলোকচিত্র দেখার সঙ্গে প্রদশর্নীতে থাকবে জলাভূমি-বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও। ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা অবধি প্রদর্শনীর দরজা সকলের জন্য খোলা। দেখা যাবে সামাজিক মাধ্যমেও।
দর্শকদের তিরস্কার করার জন্য কিন্তু এই প্রদর্শনী আয়োজিত হয়নি। বরং, এই উদ্যোগ কলকাতাবাসীকে ভাবাতে চায়। আমাদের বাড়ির নর্দমা থেকে বেরিয়ে কোথায় যায় বর্জ্য জল? ধাপার মাঠে অন্যান্য আবর্জনা থেকে কারা আলাদা করে যাবতীয় প্লাস্টিক? কী করে আমাদের বর্জ্য জলকেই আবার সব্জি ও মৎস্যচাষে কাজে লাগানো হয়? তার পর সেই আনাজ এবং মাছ আমরাই আবার বাজার থেকে কিনে আনি। বাস্তুতন্ত্রের এই শৃঙ্খলে জলাভূমির অনিবার্য ভূমিকাই নতুন করে তুলে ধরে শহরবাসীকে সচেতন করতে চায় ‘জলাভূমির কথা ও কাহিনি’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy