উদ্যাপন: ৩ জুন, বিশ্ব সাইকেল দিবস উপলক্ষে আয়োজন হয়েছিল এক সাইকেল যাত্রার। গৌরীবাড়ি থেকে হেদুয়া পর্যন্ত এই যাত্রায় ছিলেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। শুক্রবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
প্রতি বছরই ৩ জুন ‘বিশ্ব সাইকেল দিবস’ পালিত হয়। প্রশাসনেরশীর্ষ স্তর থেকে সাইকেল ব্যবহারের সুফল নিয়ে টুইট করা হয়।কিন্তু সাইকেল চালানোর পর্যাপ্ত পরিসর পাওয়া যায় না এই শহরে। তৈরি করা হয় না নিরাপদ কোনও সাইকেল লেন! ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ)-র কাছে রিপোর্ট জমা পড়ার পরেও কার্যকর করা হয় না ‘কম্প্রিহেনসিভ বাইসাইকেল প্ল্যান’।
শুক্রবার বিশ্ব সাইকেল দিবসে এই বক্তব্য সামনে রেখেই দু’টি সাইকেল-যাত্রার আয়োজন করেছিল ‘কলকাতা সাইকেল সমাজ’।একটি যাত্রা হয় উত্তর কলকাতার গৌরীবাড়ি থেকে হেদুয়া পার্ক পর্যন্ত। অন্যটি অজয়নগর-মুকুন্দপুর এলাকায়। উত্তর কলকাতারসাইকেল-যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী এবং চলচ্চিত্র পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য। সেখানে দু’জনেই নিজেদের জীবনে সাইকেলের প্রভাবের কথা জানান। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ‘কলকাতা সাইকেল সমাজ’-এর আহ্বায়ক রঘু জানা বলেন,‘‘সাইকেল এমন এক পরিবহণ ব্যবস্থা, যা দীর্ঘমেয়াদি এবং স্থায়ী সুফল দিতে পারে। করোনাকাল দেখিয়েছে, সাইকেল কতটা গুরুত্বপূর্ণ। মহিলারাও এখন সাইকেল শেখার ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহী। কিন্তু আলাদা লেন তৈরির বদলেবহু রাস্তাতেই সাইকেল নিষিদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। সাইকেল চালানোর ‘অপরাধে’ জরিমানাও আদায়করা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৮ সালে শহরের ৩৮টি রাস্তায় সাইকেল চলাচলে প্রথম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে সেই রাস্তার সংখ্যা বেড়ে হয় ১৭৪। এই সিদ্ধান্তের ফলে সমালোচনা শুরু হওয়ায় ২০১৩ সালে এক সংশোধনীতে ৬২টি রাস্তা বাদ দিয়ে বাকি১১২টি রাস্তায় সাইকেল চালানোর অনুমতি দেয় কলকাতা পুলিশ। ২০১৮ সালে আরও আটটি রাস্তায় সাইকেল নিষিদ্ধ হয়। এর পরেও একাধিক বার রাস্তার নাম বাদ গিয়েছে ও যুক্ত হয়েছে। করোনার আগে শহরের প্রায় ৬০টি রাস্তায় সাইকেল নিষিদ্ধ ছিল। ওই সব রাস্তায় সাইকেল চালাতে গিয়ে ধরা পড়লে ১০০ টাকা জরিমানা হত। বাজেয়াপ্ত করা হত সাইকেলটিও। কিন্তু আনলক-পর্বে ছোঁয়াচ এড়িয়ে গন্তব্যে যেতে সাইকেলের ব্যবহার ক্রমশ বাড়তে থাকে। প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের নির্দেশে ধরপাকড়ের ক্ষেত্রেও কিছুটা নরমহয় পুলিশ।
সেই সময়ে লালবাজারের তরফে প্রতি মাসে নির্দেশিকা প্রকাশ করে সাইকেল-যাত্রায় ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হতে থাকে।এর মধ্যেই প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশে শহরের রাস্তাকে কীভাবে সাইকেল চালানোর উপযুক্ত করা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে কেএমডিএ। সেই সময়ে টেন্ডার ডেকে একটি বেসরকারি সংস্থাকে সমীক্ষা করতে দেওয়া হয়। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সেই সমীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়ে গেলেওকাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ।এর মধ্যেই আগের মতো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সাইকেল-যাত্রায়।
উত্তর কলকাতায় বিনা পয়সায় সাইকেল শেখানোর স্কুল তৈরিকরা প্রৌঢ় সুনীশ দেব বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী ৬৭ বছর বয়সে সাইকেলচালানো শিখেছেন। এ দিন চালিয়েছেন। মহিলা থেকে শুরু করে সব স্তরের মানুষ যে ভাবে এগিয়ে আসছেন, তাতে অবশ্যই সাইকেল চালানোর সুবন্দোবস্ত নিয়ে তৎপর হওয়া উচিত প্রশাসনের।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy