বাড়িতে এখন এই অবস্থায় আছেন সাবিনা। নিজস্ব চিত্র।
রোগীকে দেখাশোনার জন্য হাসপাতালে তাঁর সঙ্গেই ছিলেন এক আত্মীয়া। দোতলা থেকে নীচে নামার সময়ে সেই মহিলাকে ঘিরে ধরে এক দল কুকুর। আঁচড়ে-কামড়ে তাঁর হাত, পা-সহ শরীরের ন’টি জায়গা থেকে মাংস খুবলে নেয় ওই সারমেয়র দল।
অভিযোগ, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে এমন ঘটনা ঘটলেও সেখানে ঠিক মতো চিকিৎসা হয়নি ওই মহিলার। ব্যান্ডেজ বেঁধে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য হাসপাতালে। গত বুধবার ওই ঘটনার পরে বসিরহাটের মাটিয়া থানার গোবিলা পূর্বপাড়া এলাকায় নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন জখম সাবিনা বিবি। প্রশ্ন হল, ওই মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা না দিয়ে মহিলাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠানো হল কেন? আর হাসপাতাল চত্বরে কুকুরের বাড়বাড়ন্ত হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?
শনিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা নিজে বিষয়টি দেখছেন। ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
কুকুরের উৎপাতের কথা মানছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। তাঁরা জানাচ্ছেন, এ নিয়ে ইতিমধ্যেই রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কলকাতা পুরসভাকেও জানানো হয়েছে। আর জি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, বিধায়ক-চিকিৎসক সুদীপ্ত রায় বললেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে বেড়ানো কুকুর-বেড়ালদের নির্বীজকরণের জন্য পুরসভাকে জানানো হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে ওই সারমেয়দের নিয়ে যাওয়ার জন্য।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই মহিলার পুরো চিকিৎসা না করে কেন তাঁকে অন্যত্র পাঠানো হয়েছিল, তা নিয়ে বিশদে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’
দেগঙ্গার শানপুকুরের বাসিন্দা, সাবিনার এক আত্মীয় কিডনির সমস্যা নিয়ে আর জি করে ভর্তি। তাঁকে দেখাশোনার জন্যই হাসপাতালে ছিলেন সাবিনা। বুধবার সকালে দোতলা থেকে নীচে নামছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, সেই সময়ে ১২টি কুকুর তাঁকে আক্রমণ করে। ওই দৃশ্য দেখে চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মী এগিয়ে এসে লাঠি নিয়ে কুকুরগুলিকে তাড়ান। তবে তত ক্ষণে মহিলার শরীরের একাধিক জায়গায় আঁচড়-কামড় বসিয়ে দিয়েছে কুকুরের দল।
সাবিনার দাদা ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলেও চিকিৎসা মেলেনি। ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ বেঁধে বেলেঘাটা আইডি-তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে একটি ইনজেকশন দেওয়ার পরে পাঠানো হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে।’’ এনআরএসে সামান্য কিছু চিকিৎসার পরে বসিরহাটে ফিরে গিয়ে সেখানেই চিকিৎসা করাচ্ছেন সাবিনা। তিনি বলেন, ‘‘আর জি করে রোজ বহু মানুষ যান। যে কেউ বিপদে পড়তে পারেন। তাই কুকুরের সমস্যার দ্রুত বিহিত করুক হাসপাতাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy