Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sexual Harassment

যৌন নিগ্রহ করে ট্রেন থেকে ধাক্কা? ধন্দে পুলিশ

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কয়েকটি প্রশ্ন তাঁদের ভাবাচ্ছে। 

অকুস্থল: হাওড়ার টিকিয়াপাড়া ও দাশনগর স্টেশনের মধ্যে এই জায়গাতেই ট্রেন থেকে মহিলাকে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

অকুস্থল: হাওড়ার টিকিয়াপাড়া ও দাশনগর স্টেশনের মধ্যে এই জায়গাতেই ট্রেন থেকে মহিলাকে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৩:২৪
Share: Save:

হাওড়ার টিকিয়াপাড়া ও দাশনগরের মাঝে চলন্ত ট্রেন থেকে তাঁকে যৌন নিগ্রহ করে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন এক মহিলা যাত্রী। রবিবার রাতের ওই ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টা পরেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায়, তাঁর সঙ্গে বিস্তারিত কথাও হয়নি পুলিশের। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কয়েকটি প্রশ্ন তাঁদের ভাবাচ্ছে।

ওই মহিলা পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছিলেন, যৌন নিগ্রহের পরে তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েক হাজার টাকা এবং মোবাইল লুট করে তাঁকে ঠেলে ফেলা হয়। হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই মহিলা পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, সেই সময়ে মহিলা কামরাটি ফাঁকা ছিল। তাঁর অভিযোগ, ট্রেনটি যখন টিকিয়াপাড়া এবং দাশনগরের মাঝে, তখনই কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁর উপরে চড়াও হয়। এর পরেই রাতের লোকাল ট্রেনে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।

যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, রাতের ট্রেনে মহিলা কামরায় পুলিশি নিরাপত্তা থাকে। যে ট্রেনে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানেও মহিলা কামরায় পুলিশ ছিল। তবে ওই মহিলা কোন কামরায় উঠেছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। হাওড়া স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা দেখেছেন, ওই মহিলা ডাউন মেচেদা লোকালে ১০টা ৪২ মিনিট নাগাদ হাওড়ায় আসেন। তাঁকে ওই ট্রেনের দরজার সামনে এক ব্যক্তির সঙ্গে কিছু ক্ষণ ধরে কথা বলতে দেখা যায়। পরে দু’জনেই ওই আপ মেচেদা লোকালে উঠে যান। এখনও পর্যন্ত এর পরবর্তী ছবি মেলেনি।

এই জায়গাতেই ধন্দে পড়েছেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তির সঙ্গেই মহিলা ট্রেনে উঠেছিলেন কি? না কি তিনি মহিলা কামরায় উঠেছিলেন?— এই বিষয়গুলিই রেলপুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। খড়্গপুরের রেলপুলিশ সুপার অবধেশ পাঠক বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। রেলপুলিশের অফিসারেরা মহিলার সঙ্গে এক বার কথা বলেছেন। তাঁর কথার সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফের তাঁর সঙ্গে কথা বলে আরও কিছু জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

সূত্রের খবর, গত রবিবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ হাওড়া থেকে আপ মেচেদা লোকালে বাড়ি ফিরছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা। রাত ১টা নাগাদ টিকিয়াপাড়া ও দাশনগরের মাঝে চ্যাটার্জিপাড়া এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা রেললাইনের পাশে গোঙানির শব্দ শুনে সেখানে গিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করেন। ব্যাঁটরা থানার টহলদারি গাড়ি তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা হাওড়া পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন ওই মহিলা। কথাও বলতে পারছিলেন না তিনি। পাশে একটি ব্যাগ ছিল। পুলিশ সেটি নিয়ে গিয়েছে।’’ সেখান থেকেই মহিলার পরিচয় পেয়ে পুলিশ পটাশপুর থানায় খবর পাঠায়। জিআরপি-র তদন্তকারীরাও হাসপাতালে গিয়ে মহিলার সঙ্গে কথা বলেন।

রেলপুলিশ সূত্রের খবর, নিজের মোবাইল নম্বরও জানাতে পারেননি ওই মহিলা। পাশাপাশি, তাঁর অভিযোগের সত্যতাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার হাওড়া হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মাথায় গভীর চোট রয়েছে। ভাঙা পায়ের অস্ত্রোপচার করা হবে। মাঝেমধ্যেই তিনি জ্ঞান হারাচ্ছেন। তবে ওঁর পরিবারের কেউ এখনও যোগাযোগ করেননি।’’

পটাশপুর-২ ব্লকের চকশ্রীকৃষ্ণপুর (বিলকাজলা) গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার বাড়ি তালাবন্ধ পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয়দের থেকে পুলিশ জেনেছে, চার-পাঁচ দিন আগে ওই মহিলা, তাঁর স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়ে কোথাও চলে যান। মহিলার স্বামীকে পটাশপুর বাজারে মাঝেমধ্যে ডাবের দোকান দিতে দেখা যেত। বেশির ভাগ সময়ই তাঁদের বাড়িতে কেউ থাকতেন না। এমনকি তাঁরা কী করেন, তা নিয়েও কেউ কিছু জানেন না বলেই দাবি স্থানীয়দের।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Sexual Harassment Tikiapara Dasnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy