শ্যামবাজার মোড়ে বামেদের সমাবেশে উত্তেজিত মহিলাকে ঘিরে হইচই। ছবি: শোভন চক্রবর্তী।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শ্যামবাজার মোড়ে ম্যাটাডরের উপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। আচমকাই তাল কাটল এক মহিলার চিৎকারে। তিনি দাবি তোলেন, ধর্ষণের বিচার চেয়ে যে সমাবেশ হচ্ছে, সেখানে কেন রাজনীতির কথা হচ্ছে? মহিলাকে থামাতে প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েন সিপিএমের মহিলা কর্মীরা। কোনও মতে তাঁরা সেখান থেকে ওই মহিলাকে সরিয়ে নিয়ে যান। সিপিএমের দাবি, মহিলা পঞ্জাব থেকে এসেছিলেন। সিপিএম নেত্রী প্রিয়াঙ্কা কাঞ্জিলাল দাবি করেছেন, ওই মহিলা ‘অসংলগ্ন’ আচরণ করছিলেন বলে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডে ন্যায়বিচার, অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে এবং স্বাস্থ্য দুর্নীতির প্রতিবাদে মঙ্গলবার ‘মহামিছিল’-এর ডাক দিয়েছিল বামেরা। বিমান বসু, সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, মিনাক্ষি মুখোপাধ্যায়-সহ বাম নেতাদের প্রতিবাদ মিছিল শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে এসে থামে। শুরু হয় সভা।
ঘড়িতে তখন ৫টা ৪৫। ম্যাটাডরের উপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম। তখনই নেতাজি মূর্তির নীচে দাঁড়িয়ে সাদা-কালো ডোরাকাটা টিশার্ট পরা এক মহিলা চিৎকার করে বলেন, ‘‘আপনারা রাজনীতির কথা কেন বলছেন? ধর্ষণের বিচারের কথা বলুন! একে অন্যকে দোষারোপ করছেন!’’ সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয়ে ওঠেন সিপিএমের মহিলা কর্মীদের একাংশ। তাঁরা ওই মহিলাকে চুপ করতে বলেন। কিছু পুরুষ বাম সমর্থক বলতে থাকেন, ‘‘আপনাকে কি আরএসএস পাঠিয়েছে? তৃণমূল পাঠিয়েছে?’’ তার পরেই দু’-তিন জন মহিলা তাঁকে সভাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
মহিলা নিজের দাবিতে অনড়। বার বার একই কথা বলতে থাকেন। এর পর দেখা যায়, সিপিএমের একদল মহিলা কর্মী তাঁকে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছেন ভূপেন্দ্র বোস অ্যাভিনিউয়ের দিকে। সেই দলে দেখা গেল সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য মধুজা সেন রায়কে। মহিলাকে বক্তৃতাস্থল থেকে অনেকটা দূরে নিয়ে যান সিপিএমের মহিলা কর্মীরা। সেখানে গিয়ে সিপিএমের মহিলা বাহিনীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় ওই মহিলার। তিনি বলে চলেন, ‘‘আপনারা দাবি করছেন... আইন হচ্ছে না। মমতা মোদীকে বলছেন। মোদী মমতাকে বলছেন। ধর্ষণের বিষয়ে কী হবে?’’ পরিস্থিতি সামাল দিতে স্লোগান দিতে থাকেন প্রায় সিপিএমের শতাধিক মহিলা কর্মী। সিপিএম নেত্রী প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘‘ওই মহিলা অসংলগ্ন আচরণ করছিলেন। আমরা তাই মূল সভাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy