হারিয়ে যাওয়া সেই তানপুরা। নিজস্ব চিত্র
একটি তানপুরা এবং কিছু স্মৃতি! একটি তানপুরা এবং কিছু ধন্দ! একটি তানপুরা ঘিরে টানাপড়েনের জের এ বার থানা-পুলিশ অবধি গড়িয়েছে। হারানো তানপুরা ফিরে পাওয়ার আশায় পুলিশ কিংবা আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক মহিলা।
অভিযোগকারিণী মনীষা বসুর দাবি, নিখোঁজ তানপুরার সঙ্গে জড়িয়ে আছে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সুচিত্রা মিত্রের স্মৃতি। প্রয়াত শিল্পীর পুরনো শিষ্যা মনীষা। ১৯৭৯ সালে সুচিত্রার ইচ্ছে ও রুচি অনুযায়ীই স্নেহভাজন ছাত্রীর জন্য তৈরি হয় সেই তানপুরা। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্র রবিবিতানের শিক্ষক সুশীল দে ভৌমিককে তানপুরাটির গড়ন, ধরন সব নিজে বলে দিয়েছিলেন সুচিত্রা। সেই মতো ভবানীপুরে একটি দোকান থেকে বরাতমাফিক তৈরি হয় তানপুরাটি। সেই দোকান বা সেই তানপুরা, কোনওটিই এখন নেই!
অভিযোগকারিণীর দাবি, ২০১৬-র ১২ মার্চ নেতাজিনগর এলাকার সূর্যনগরে জনৈক গোপাল মিস্ত্রির দোকানে তানপুরাটি পালিশ করতে দিয়েছিলেন তিনি। তিন বছর বাদে ফেরত নিতে এসে দেখেন, অন্য একটি তানপুরা দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। মনীষার কথায়, ‘‘ওই তানপুরাটি আমার নয় বলে দাবি করলে দোকানে কিছু তানপুরা দেখান হয় আমায়। একটি ভাঙা তানপুরার সঙ্গে আমার তানপুরাটির মিল পাই।’’ গোপালবাবু কাগজে সই করে সেই তানপুরা সারানোরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু পুরনো ছবি ঘেঁটে মনীষার এখন ধারণা, সেই তানপুরাও তাঁর নয়। প্রতারণা করা হয়েছে বলে তিনি নেতাজিনগর থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। ডিসি (সাউথ সাবারবান) সন্তোষ নিম্বলকরকেও বিশদে চিঠি লিখে জানিয়েছেন তিনি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে নেতাজিনগর থানার ব্যবহারে মনীষা যারপরনাই ব্যথিত বলে ডিসি-কে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করলেও আমল দিচ্ছে না।’’ নেতাজিনগরের ওসি সুভাষ অধিকারীকে ফোন করা হলেও তিনি কথা বলতে পারবেন না বলে জানান। তবে ডিসি বলেন, ‘‘অভিযোগটির তদন্ত চলছে।’’ তানপুরা মিস্ত্রি গোপালবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘মনীষাই তিন বছর ধরে তানপুরাটি ফেলে রেখেছিলেন, ফলে বিষয়টি গুলিয়ে যেতেই পারে।’’ তবে মনীষার পাল্টা দাবি, ‘‘গোপালবাবুই মাঝেমধ্যে কলকাতায় নেই বলে নানা ভাবে আমায় দেরি করাচ্ছিলেন। বেশ কয়েক বার গিয়েও আমি ফিরে আসি।’’ মনীষার শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে যেতে বলেছেন। কিন্তু মনীষার বক্তব্য, ‘‘আমার শিক্ষক সুচিত্রাদির স্মৃতি জড়ানো তানপুরা আমার কাছে অমূল্য। টাকা দিয়ে এর ক্ষতিপূরণ হয় না।’’ গোপালবাবু আসল তানপুরাটি কাউকে দিতে পারেন বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন অভিযোগকারিণী। তাঁর দাবি, স্মৃতিজড়িত এই তানপুরা ফিরিয়ে দিক পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy