Advertisement
০৩ অক্টোবর ২০২৪

ছেলেকে দেখতে গিয়ে স্বামীর হাতে খুন স্ত্রী

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পনেরো আগে মেমানপুরের বাসিন্দা শিবু কর্মকার নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বজবজ থানার কালিকাপুরের বাসিন্দা মধুমিতা নামে এক মহিলার বিয়ে হয়েছিল।

মধুমিতা কর্মকার

মধুমিতা কর্মকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০০
Share: Save:

ছেলের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে স্বামীর হাতে খুন হলেন এক মহিলা। পরে গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামীকে। ধৃতের নাম শিবু কর্মকার। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে মহেশতলা থানার মেমানপুর এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পনেরো আগে মেমানপুরের বাসিন্দা শিবু কর্মকার নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বজবজ থানার কালিকাপুরের বাসিন্দা মধুমিতা নামে এক মহিলার বিয়ে হয়েছিল। শিবুর প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ তৈরির কারখানা ছিল। ২০১৭ সালে ক্যারিব্যাগ তৈরির উপরে নিষেধজ্ঞা জারি হলে সংসারে আর্থিক অনটন দেখা দেয়। এর পরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। ওই বছরই মধুমিতা বাপের বাড়ি ফিরে যান। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি নেন তিনি। মধুমিতা এবং শিবুর ১১ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। তবে মা মামার বাড়ি চলে যাওয়ার পরে ইমন নামের সেই বালক তার বাবার সঙ্গেই থাকত।

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার ইমনের জন্মদিন ছিল। কয়েক সপ্তাহ আগে মধুমিতা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাই তিনি ছুটিতে ছিলেন। এ দিন তাঁর কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তাই শনিবার বিকেলেই ইমনকে শুভেচ্ছা জানাতে কিছু উপহার-সহ বোন পারমিতাকে নিয়ে মেমানপুরের বাড়িতে যান মধুমিতা। ওই সময়ে বাড়িতেই ছিল শিবু। অভিযোগ, ছেলের সঙ্গে দেখা করতে না দিয়ে সে মধুমিতাকে বাড়ি থেকে বার করে দেয়। এর পরেই মহেশতলা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন মধুমিতা। মহেশতলা থানার বক্তব্য, মধুমিতা ও শিবুর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। আদালতের নির্দেশ মেনে ছেলে বাবার কাছেই রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোর্টের নির্দেশ না থাকলে মা ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। অথচ মধুমিতা তেমন কোনও নথি পুলিশে দেখাতে পারেননি। এর পরেই মহেশতলা থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি করেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মহেশতলা থানা থেকে ফিরে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ফের শিবুর বাড়ি যান মধুমিতা। তখনই শিবু বাড়ি থেকে বেরিয়ে মধুমিতার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে চপার দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপায়। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে শিবুকে ধরে ফেলেন। শিবুর প্রতিবেশী রত্না ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা গুরুতর অবস্থায় মধুমিতাকে একটি ভ্যানে চাপিয়ে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাই। চিকিৎসকেরাই সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’’

এক তদন্তকারী জানান, চপার দিয়ে মধুমিতাকে কোপানোর পরে নিজের ডান হাতের শিরা কেটে ফেলেছিল শিবু। তাকেও একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মধুমিতার বোন পারমিতা বলেন, ‘‘ইমনের সঙ্গে দেখা করতে আসলেই জামাইবাবু খেপে যেত। বছর দু’য়েক ধরে ছেলের সঙ্গে দিদিকে দেখা পর্যন্ত করতে দেয়নি জামাইবাবু। তাই বলে খুন করে দিতে পারে এমনটা আমরা ভাবতেই পারিনি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে ইমন তাঁর কাকার বাড়িতে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE