সঙ্কটকালে ভোট যুদ্ধে প্রবীণ দুই বাম নেতা অশোক মিত্র এবং সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে মানুষের নস্ট্যালজিয়াকে হাতিয়ার করেছে সিপিএম। যাদবপুরের সচেতন ভোটারদের কাছে পৌঁছতে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথবাবু এবং সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ অশোকবাবুর আশীর্বাদ সম্বলিত গ্রিটিংস কার্ড ভোটারদের বিলি করছেন। ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সুব্রত দাশগুপ্তও তাঁকে জয়ী করার জন্য সোমনাথবাবুর আবেদন ছাপিয়ে বিলি করছেন।
গ্রিটিংস কার্ডে সোমনাথবাবু ভোটারদের কাছে আবেদনে জানিয়েছেন, ১৯৭৭ সালে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। প্রচার মিছিলে হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তখন পাশে ছিলেন তরুণ উজ্জল। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন তিনি। তার পর ১৯৮৫ সালে ১১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। যাদবপুরে বহু উন্নয়নের কাজ করেছেন তিনি। ভোটাররা যেন সেই উজ্জ্বলকে ফের নির্বাচিত করেন। পাশাপাশি, অশোকবাবুর আবেদন, সারা রাজ্য ও রাজধানী কলকাতায় ভয়ঙ্কর অমানবিকতার বাস্তব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তা প্রতিরোধে বামপন্থীদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে উজ্জ্বলের প্রতি সমর্থন দৈনন্দিন বাঁচার সংগ্রামকে অধিকতর শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ওই দু’জনের সব সময়ই যোগাযোগ ছিল। এখনও রয়েছে। এ বার নির্বাচনে লড়াই করছি। তাই আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলাম। ওঁরা আশীর্বাদ করেছেন। আমি তা কার্ডের মাধ্যেমে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।’’
১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটারদের কাছে আবেদনে সোমনাথবাবু জানিয়েছেন, গণ আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বেনামি জমি দখল করে জনস্বার্থে যাদবপুর স্টেডিয়াম তৈরির কর্মকাণ্ডে সেখানকার সিপিএম প্রার্থী সুব্রতবাবু যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৮ সালে বন্যার্ত মানুষের সাহায্যার্থে দিনরাত স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁকে ওই ওয়ার্ডে জয়ী করার প্রয়োজন রয়েছে।
সোমনাথবাবু এবং অশোকবাবু এখন আর সিপিএমের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। সোমনাথবাবু সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত। অশোকবাবু নিজেই সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাম সমর্থকদের ওই দু’জনের প্রতি এখনও দুবর্লতা রয়েছে। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটেও সিপিএম তাদের সমর্থনে প্রচার করার জন্য ওই দু’জনের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। অশোকবাবু অবশ্য তখন সাড়া দেননি। কিন্তু সোমনাথবাবু সেই সময় থেকে একাধিক নির্বাচনে সিপিএমের সমর্থনে প্রচার করেছেন। সম্প্রতি সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে এবং পরে রাজ্য কমিটির বৈঠকে সোমনাথবাবুকে দলে ফেরানোর দাবি উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতে এ বার পুরভোটে তাঁর প্রচার বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের ব্যাখ্যা, ‘‘যাদবপুর এক সময় বাম দুর্গ ছিল। সেখানে সচেতন ভোটারের সংখ্যা বেশি এবং তাঁরা মূলত বামপন্থী। গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ঝড়ে বাম দুর্গ টলে গেলেও পরিবতর্নের জমানায় যাদবপুরে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, তা ফের ওই ভোটারদের বামমুখী করতে পারে। সেখানে সোমনাথবাবু এবং অশোকবাবুর বার্তা তাঁদের উপলব্ধিতে সাহায্য করতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy