Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বামীর মৃত্যুতে বান্ধবীর বিরুদ্ধে পুলিশে স্ত্রী

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পেশায় মন্দিরের সেবায়েত সিদ্ধার্থ তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুপুত্রকে নিয়ে বেহালার ব্রাহ্মসমাজ রোডে থাকতেন। বছর দশেক আগে স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য

সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর বান্ধবীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার পর্ণশ্রীতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য (৪৭)। ঘটনায় তাঁর বান্ধবীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পেশায় মন্দিরের সেবায়েত সিদ্ধার্থ তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুপুত্রকে নিয়ে বেহালার ব্রাহ্মসমাজ রোডে থাকতেন। বছর দশেক আগে স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পাঁচ বছর আগে বেহালার রবীন্দ্রনগরের মহেন্দ্র ব্যানার্জি রোডে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন সিদ্ধার্থ। ওই ফ্ল্যাটেই থাকেন তাঁর বান্ধবী। স্থানীয় সূত্রের খবর, মহিলার স্বামী তাঁর সঙ্গে থাকেন না। দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন ওই মহিলা। সিদ্ধার্থের স্ত্রী গৌতমী ভট্টাচার্য সোমবার বলেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ হঠাৎই স্বামীর মোবাইলে একটি ফোন আসে। কিছু ক্ষণ উত্তপ্ত বাক্য বিনিমিয়ের পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সিদ্ধার্থ।’’ গৌতমীর কথায়, ‘‘অনেক রাত পর্যন্ত ওর জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। তার পরে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত দুটো নাগাদ কড়া নাড়ার আওয়াজ শুনে দরজা খুলে দেখি, ওই মহিলার ছেলে দাঁড়িয়ে। সে-ই বলল, সিদ্ধার্থ অসুস্থ হয়ে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি।’’

রাতেই আত্মীয়দের নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যান গৌতমী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই মহিলা পুলিশকে বলেছেন, সিদ্ধার্থ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু একটা সুস্থ মানুষ রবিবার সন্ধ্যায় আমার সঙ্গে কাটানোর পরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কী ভাবে আত্মহত্যা করতে পারে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হাসপাতালে গিয়ে আমার আত্মীয়েরা সিদ্ধার্থের গলায় আঁচড়ের দাগ পেয়েছেন। গলায় দড়ি বাঁধলে যে দাগ হওয়ার কথা, তা ছিল না। ওই মহিলাই চক্রান্ত করে সিদ্ধার্থকে খুন করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করুক।’’

রবিবার গভীর রাতে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে সিদ্ধার্থের দেহ আসার পরে পর্ণশ্রী থানায় খবর দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রবীন্দ্রনগরের যে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে, হাসপাতাল থেকে সেখানে যায় পুলিশ। মৃতের এক আত্মীয় শঙ্কর হালদার বলেন, ‘‘ওই মহিলা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, রবিবার রাতে কুকুরকে খাওয়ানোর সময়ে সিদ্ধার্থ ঘরে ঢুকে ছিটকিনি বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে দড়ি বেঁধে আত্মহত্যা করেন। বহু ক্ষণ সিদ্ধার্থ দরজা খুলছেন না দেখে তাঁর বান্ধবী দুই ছেলেকে নিয়ে ছিটকিনি ভেঙে ঘরে ঢোকেন। এর পরে সিদ্ধার্থের দেহ নামিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।’’

শঙ্করের অভিযোগ, ‘‘ওই মহিলার দাবি সত্যি নয়। রবিবার গভীর রাতে রবীন্দ্রনগরের ফ্ল্যাটে আমিও ঢুকেছিলাম। বাইরে থেকে চাপ দিয়ে ছিটকিনি ভাঙলে দরজার যেমন অবস্থা হওয়ার কথা, সেটা ছিল না। তা থেকে আমাদের অনুমান, কাকু (সিদ্ধার্থ) আত্মহত্যা করেননি।’’

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন। তবুও আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। যাবতীয় অভিযোগও পরীক্ষা করা হচ্ছে। মৃতের বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Behala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy