গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
৭৩তম প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক আগের সন্ধ্যায় বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পদ্মভূষণ সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার পরই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে দেশে। প্রয়াত বামনেতা ইএমএস নাম্বুদিরিপাদকে উল্লেখ করে সিপিএমের দাবি, রাষ্ট্রের দেওয়া এমন কোনও পুরস্কার তারা গ্রহণ করে না। এ নিয়েই বেঁধেছে জোর তরজা। প্রশ্ন উঠছে, কোনও সংগঠনের দেওয়া পুরস্কার বা সম্মান গ্রহণ করতে পারলে রাষ্ট্রের সম্মানে কেন অরুচি সিপিএমের?
প্রসঙ্গত, ২০০১-এ মাদার টেরেসা পুরস্কার পেয়েছিলেন বুদ্ধদেবের পূর্বসূরি প্রয়াত জ্যোতি বসু। পুরস্কারমূল্য হিসেবে দু’লক্ষ টাকা, সোনার মেডেল ও শাল দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এ ছাড়া ২০০৫-এ ‘ইন্সস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন এডুকেশন’ জ্যোতি বসুকে বিশেষ সম্মান দেয়। ২০০৭-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধুনা প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ডক্টর অব ল’ দেয়। তাঁকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ডি-লিট’-ও দিতে চেয়েছিল, কিন্তু বুদ্ধদেবের পূর্বসূরি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বলে শোনা যায়।
বুদ্ধদেবের আনুষ্ঠানিক বিবৃতির আগেই আনন্দবাজার অনলাইন জানিয়েছিল, তাঁর বাড়িতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ফোন এসেছিল। বুদ্ধদেব বিষয়টি তখন জানতেন না। পরে খবর জেনে তৎক্ষণাৎ সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন।
বুদ্ধদেবের পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যানের পর এই বিষয়ে জলঘোলা হোক, তা চায় না আলিমুদ্দিন। এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে সরকারের তরফে কেউ কথা বলতে চাইলে ডাকযোগে পার্টি কিংবা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যোগাযোগ করা যেতে পারে। সরাসরি ফোন বা দেখা করতে বারণ করা হয়েছে। এ কথা নিজের টুইটারে জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
বুদ্ধদা'র পক্ষে তাঁর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া, ঘনঘন ওঠাবসা করা দুরূহ। জরুরি বিষয়ে তাঁর পরামর্শ নিতে হলে আমাদের কাউকে না কাউকে,তাঁর কথা শুনে সেটা লিখে শুনিয়ে,তাঁর সম্মতি নিতে হয়। তাঁর মস্তিষ্ক আগের চেয়ে সক্রিয়।আলোচ্য বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া হুবহু প্রকাশ করার দায়িত্ব আমাদের। pic.twitter.com/q0s3viGdGa
— Surjya Kanta Mishra (@mishra_surjya) January 25, 2022
বুদ্ধদেবের পদ্ম-প্রত্যাখ্যানের পরই সিপিএমের তরফে বলা হয়, রাষ্ট্রের দেওয়া এমন কোনও পুরস্কার ধারাবাহিকতা রেখেই তারা তা গ্রহণ করেন না। কারণ, তাদের কাজ মানুষের জন্য, পুরস্কারের জন্য নয়। প্রয়াত সিপিএম নেতা ইএমএস নাম্বুদিরিপাদকেও পুরস্কৃত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তিনিও তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
Com. Buddhadeb Bhattacharya who was nominated for the Padma Bhushan award has declined to accept it. The CPI(M) policy has been consistent in declining such awards from the State. Our work is for the people not for awards. Com EMS who was earlier offered an award had declined it. pic.twitter.com/fTmkkzeABl
— CPI (M) (@cpimspeak) January 25, 2022
যদিও বিজেপি-র কাছে এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে পাল্টা সিপিএমকেই আক্রমণ শানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘কমিউনিস্টরা চিরদিন দেশের পরম্পরা-সংস্কৃতিকে অপমান করেছে।’’
এ প্রসঙ্গে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘এমনটা কোথাও বলা নেই, যে কোনও পুরস্কার নেওয়া যাবে না। কোনও সামাজিক সংগঠন পুরস্কার দিলে আমরা তা নিতে পারি। কিন্তু দেশের জন্য কাজ করে পুরস্কার নিতে হবে কেন? দেশের মানুষের জন্য কাজ করাই তো আমাদের দায়িত্ব, এতে পুরস্কারের কথা আসছে কোথা থেকে।’’
সব মিলিয়ে বুদ্ধদেবের পদ্ম-প্রত্যাখ্যানের অব্যবহিত পরে তা নিয়েই উত্তাপ বাড়ছে রাজ্য রাজনীতির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy