দেখো-রে: লালদিঘির পাড়ে জমে থাকা প্লাস্টিক ও অন্য আবর্জনা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
লালদিঘি ও সংলগ্ন এলাকাকে প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা বলে ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা। লালদিঘির পূর্ব পাড়ে পুরসভার তরফে বাঁধানো ফলকে নোটিস টাঙিয়ে বলাও হয়েছে, লালদিঘি এবং আশপাশের এলাকায় প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বা প্লাস্টিকজাত কোনও দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওই এলাকায় প্লাস্টিকের আবাধ ব্যবহার চলছেই।
শনিবার দুপুরে লালদিঘির চারপাশ ঘুরে দেখা গেল, পাড়ে ইতিউতি চায়ের প্লাস্টিক কাপ এবং প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে ভর্তি। লালদিঘিতে অবাধ স্নান, কাপড়কাচা এবং প্লাস্টিক ফেলা ঠেকাতে ২০১৪ সালে চারপাশ রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরসভার তরফে নিযুক্ত করা হয়েছে তিনটি শিফটে পাঁচ জন করে নিরাপত্তারক্ষী। তা সত্ত্বেও প্লাস্টিক ফেলা ঠেকানো যায়নি। লালদিঘির পশ্চিম পাড়ে, মহাকরণের উল্টোদিকে রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে গত কয়েক মাস ধরে শনি ও রবিবার ‘দেখো রে’ অনুষ্ঠান চলছিল। বর্ষা এসে যাওয়ায় ২৬ জুন থেকে ওই অনুষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। কিন্তু কুড়ি দিন পেরিয়ে গেলেও লালদিঘির পশ্চিমপাড়ে স্থায়ী মঞ্চের নীচে এখনও ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে ফাঁকা প্লাস্টিকের বোতল, জলের পাউচ।
পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘লালদিঘি ও আশপাশে যে কোনও ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। অথচ রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠানেই অবাধে প্লাস্টিক ব্যবহার হয়েছে। রাজ্য সরকারের উচিত ছিল, লালদিঘির পাড়ে ওই অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকজাত কোনও জিনিস ব্যবহার না করা। আইন প্রণয়নকারীরাই আইন ভাঙছেন। এটা অত্যন্ত দুভার্গ্যজনক।’’ কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘কলকাতা পুরোপুরি প্লাস্টিকমুক্ত, এ কথা আমরা দাবি করি না। কিন্তু লালদিঘিতে প্লাস্টিক নেই। তবুও কোথাও প্লাস্টিক রয়ে গেলে তা সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেও প্লাস্টিকের বোতল, জলের প্যাকেট এখনও লালদিঘির পাড়ে পড়ে থাকলে তা উচিৎ নয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’’ কলকাতার মেয়র তথা পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেখো রে শেষ হওয়ার পরে লালদিঘির আশপাশ পুরোপুরি পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও কিছু পড়ে থাকলে তা দেখে নিচ্ছি।’’
লালদিঘির নিরাপত্তার জন্য রয়েছেন তিনটি শিফটে পাঁচ জন। ওই এলাকায় প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন? কর্তব্যরত এক নিরাপত্তারক্ষীর কথায়, ‘‘প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ করতে দিঘির চারপাশে একাধিক ডাস্টবিন রাখা হয়েছে। আমরা দর্শনার্থীদের বারবার নিষেধ করি। তা সত্ত্বেও মানুষ প্লাস্টিকের ভাঁড় পুকুরের পাড়ে ফেলে দেন। নিজেরা সচেতন না হলে আমরা কী করব।’’
শনিবার দুপুরে লালদিঘিতে গিয়ে এক হকারকে নিরাপত্তারক্ষীদের সামনেই প্লাস্টিকের কাপে চা বিক্রি করতে দেখা গেল। তাঁদের অনুমতি ছাড়া লালদিঘির গেটের ভিতরে হকাররা ঢুকে পড়ছেন কী ভাবে? এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি নিরাপত্তারক্ষীরা।
কলকাতা পুরসভার সচিব হরিহরপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের কাপ নিয়ে যাতে কোনও হকার লালদিঘির ভিতরে না ঢুকতে পারেন, সেই কাজটাও নিরাপত্তারক্ষীদের কঠোর ভাবে দেখা দরকার। আমি এ বিষয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy