প্রতীকী ছবি
পঞ্চসায়র এলাকার নিউ গড়িয়া কোঅপারেটিভ আবাসন চত্বরে গাড়ি চালানো শিখতে গিয়ে বাইকে ধাক্কা মারায় ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল বাইকচালকের। সোমবারের ওই ঘটনার পরে গাড়িচালক মোহনলাল ঘোষকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছিল, গাড়িচালকের পাশের আসনে বসে ছিলেন আরও এক জন। তিনি আদৌ প্রশিক্ষক ছিলেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলই। তদন্ত চলাকালীন জানা গেল, ওই ব্যক্তি আদৌ প্রশিক্ষক নন। তিনি গাড়ির একটি শোরুমের এক কর্মী!
জানা গিয়েছে, রঞ্জিত নস্কর নামে ওই ব্যক্তি ভিআইপি রোডে একটি গাড়ির শোরুমে কাজ করেন। মঙ্গলবার রঞ্জিত জানান, সোমবার মোহনলালই তাঁকে ডেকেছিলেন তাঁর নতুন কেনা স্বয়ংক্রিয় গাড়িটি (যে গাড়িতে গিয়ার এবং ক্লাচ থাকে না) কী ভাবে চালাতে হয়, তা শেখার জন্য। এর পরে তিনি তাঁকে সামনের আসনে বসিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরোন। তবে রঞ্জিত নিজে গাড়ি চালাতে জানেন না! এমনকি, ধৃত মোহনলালের লাইসেন্স ছিল না বলেও সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, রঞ্জিতের বাড়ি কামালগাজি এলাকায়। বাড়িতে মা-বাবা ছাড়াও রয়েছেন স্ত্রী এবং এক সন্তান। নতুন ওই গাড়িটি কেনার সময়েই মোহনলালের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল রঞ্জিতের। তিনি মোহনলালকে তাঁর পুরনো গাড়িটি বিক্রির ব্যাপারেও সাহায্য করেছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী মোহনলাল থাকেন কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনের কাছে। বছরখানেক আগে পুরনো গাড়ি বিক্রি করে স্বয়ংক্রিয় গাড়িটি কিনেছিলেন তিনি। সেটি তাঁর নামেই নথিভুক্ত ছিল। এ দিন রঞ্জিত জানিয়েছেন, গাড়ি কেনার পর থেকে মোহনলালের বাড়িতে কয়েক বার গিয়েছিলেন তিনি। দিনকয়েক আগে মোহনলাল আবারও ফোন করে তাঁকে আসতে বলেন।
রঞ্জিতের দাবি, মোহনলালের পুরনো গাড়িটি ‘ম্যানুয়াল’ হওয়ায় (যে গাড়িতে গিয়ার এবং ক্লাচ থাকে) নতুন গাড়িটি চালাতে তাঁর প্রাথমিক ভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণেই তিনি তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সেই মতো সোমবার সকালে তিনি মোহনলালের বাড়িতে যান। কাজ মিটিয়ে তাঁর ভিআইপি রোডের অফিস যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ওখানে যাওয়ার পরে মোহনলাল রঞ্জিতকে পাশে বসিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরোন। গাড়ি চালাতে চালাতেই ঢুকে পড়েন নিউ গড়িয়ার ওই আবাসনের ভিতরে। ফেরার সময়ে ঘটে দুর্ঘটনা। সূত্রের খবর, রঞ্জিত নিজেও গাড়ি চালাতে না জানায় তিনি সেই মুহূর্তে গাড়িটিকে থামাতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, সোমবারের ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় নিউ গড়িয়া কোঅপারেটিভ আবাসনেরই বাসিন্দা, পেশায় বিজ্ঞানী সুনীলকুমার গড়াইয়ের। কর্মসূত্রে বিশাখাপত্তনমে থাকতেন সুনীলবাবু। দিন দুয়েক আগে সেখান থেকে ফিরেছিলেন। ওই দিন বাজার করে বাইক নিয়ে ফেরার সময়ে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
মঙ্গলবার ময়না-তদন্তের পরে সুনীলবাবুর দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy