Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫

‘খাওয়াব আজব খাওয়া’, পাত পড়েছে মেলায়

জিভ ছুঁলে কেমন সেই স্বাদ? বোঝাতে কালা ভাতের ফ্রায়েড রাইস আর স্যালাড বানিয়ে মেলায় নিয়ে এসেছেন তাঁরা। সে সব ঘিরে আগ্রহী মানুষের ভিড়। 

পেটপুজো: মেলায় মিলছে বাঁশপোড়া বিরিয়ানি। নিজস্ব চিত্র

পেটপুজো: মেলায় মিলছে বাঁশপোড়া বিরিয়ানি। নিজস্ব চিত্র

অঞ্জন সাহা
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৯
Share: Save:

কালো চালের ফ্রায়েড রাইস, বাঁশপোড়া বিরিয়ানি কিংবা গুগলির পকোড়া। হাল্কা শীতের সন্ধ্যায় খেতে যদি মন চায়, মিলছে কলকাতাতেই।

ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের মহিলা চাষিরা নিজেদের খেতে ফলিয়েছেন ব্ল্যাক রাইস। স্থানীয় ভাষায় ‘কালা ভাত’। শুধু ব্ল্যাক রাইস-ই নয়, বাংলার বিভিন্ন দেশজ প্রজাতির ধানের পাশাপাশি তারা ফলিয়েছেন ভিন্‌ রাজ্য মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশের ধান। মধ্যপ্রদেশের আদান শিল্পা প্রজাতির চাল লাল রঙের। ‘রেড রাইস’ নামে বাজারে হাজির সেটিও।

নয়াগ্রামের মহিলা চাষি সংগঠন ‘আমন’-এর সদস্যা পারুল মাহাতো কিংবা স্বর্ণপ্রভা মাহাতোরা এখন এই লাল, কালো চাল বিক্রিতে ব্যস্ত কলকাতায়। সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে, সবলা মেলায়। কেজিতে ১০০ টাকায় ব্ল্যাক রাইস, কিংবা ৮০ টাকায় রেড রাইস বিকোচ্ছেও বেশ। জিভ ছুঁলে কেমন সেই স্বাদ? বোঝাতে কালা ভাতের ফ্রায়েড রাইস আর স্যালাড বানিয়ে মেলায় নিয়ে এসেছেন তাঁরা। সে সব ঘিরে আগ্রহী মানুষের ভিড়।

এই মহিলা চাষিদের মধ্যে কাজ করছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। তার সদস্য বিনীতা ছেত্রী জানাচ্ছেন, নয়াগ্রাম ব্লকের ছ’টি পঞ্চায়েত— পাতিলা, চাঁদাবিলা, বড় খাকরি, মলম, আড়রা আর চন্দ্ররেখার মহিলা চাষিরা বাংলার দেশজ ধান চাষে নেমেছেন। বেশ কয়েক হাজার মহিলা এতে শামিল হয়েছেন। ঝাড়গ্রাম অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সাযুয্য রেখে, জৈব সার ও কীটনাশককে গুরুত্ব দিয়ে চলছে চাষের কাজ। দেশজ কারিচম্পা, মৃগাইশাল, কবিরাজশাল, বাদশাভোগ ধানের চাষ হচ্ছে। বাংলার নিজস্ব প্রজাতির পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের ব্ল্যাক রাইসের চাষবাস হচ্ছে সহজেই। এই চাল এখন রাজ্যের বাইরে পাঠানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

কালো, লাল চালের মতোই মেলায় নজর কাড়ছে বাঁশপোড়া বিরিয়ানি আর গুগলির পকোড়া। তেপান্তর নামে একটি সংস্থা বাঁকুড়ায় ছাতনায় সম্পূর্ণ গ্রামীণ পরিবেশে পর্যটনের ব্যবস্থা করেছে। বাঁকুড়া থেকে গুগলি এনে সল্টলেকের মাঠে পকোড়া বানাচ্ছে তারা। চা-কফির সঙ্গে সেগুলি খেতে আগ্রহ অনেকেরই। তাদের স্টলে বিকোচ্ছে বাঁশপোড়া বিরিয়ানিও। একটু দূরেই চায়ের সম্ভার সাজিয়ে হাজির প্রয়াস। দেশ-বিদেশের অন্তত ৩০ রকমের চা পাতা বিক্রিই শুধু নয়, বানিয়ে পরিবেশন করছে তারা।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতরের উদ্যোগে এই মেলায় ২৩টি জেলা থেকেই পৌঁছেছেন গোষ্ঠীর ৪৪২ জন সদস্য। ৩১০টি স্টলে জ্যাম, জেলি, জামাকাপড়, গয়না, অন্যান্য হস্তশিল্প নিয়ে হাজির হয়েছেন তাঁরা। মিলছে পিঠেপুলিও। গোকুল পিঠে, ভাপা পুলি, দুধ পুলি, রসবড়া খেতে আগ্রহী যাঁরা, তাঁদের হাতের কাছেই সব কিছু। জয়নগরের মোয়া, খেজুর গুড় কিংবা আনন্দনাড়ুর খোঁজও পেয়ে যাবেন।

তবে এত কিছু আয়োজনের পরেও যেন কাটা থেকে গিয়েছে কোথাও। মেলার মাঠে অনেকেই বলছেন, এ বার ভিড় যেন ততটা নেই। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের অনেকেই রাজ্যের বিভিন্ন মেলায় ঘুরে বেড়ান। তাঁদের বক্তব্য, মানুষের পকেটে পয়সা নেই, এখন তাঁরা আসছেন কম, কিনছেনও সতর্ক হয়ে।

অন্য বিষয়গুলি:

Self Help Group and Self Employment Department West Bengal Salt Lake Food Fair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy