প্রয়োজনে: উল্টোডাঙা বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতারা। সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মাঠে ভর্তি আনাজ। কিন্তু তার দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। অনেক কম দামে আনাজ বিক্রি করতে হচ্ছে ফড়েদের কাছে। অথচ, কলকাতা ও শহরতলির দমদম, মধ্যমগ্রাম এবং বারাসতের খুচরো বাজারে দাম কমছে না আনাজের। যে পটল ফড়েদের কাছে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন চাষিরা, সেই পটলই শহরের ছোট-বড় বিভিন্ন বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। একই অবস্থা অন্য আনাজের ক্ষেত্রেও। লকডাউনের বাজারে চড়া দামে আনাজ কিনতে গিয়ে পকেটে টান পড়ছে সাধারণ মানুষের।
উত্তর ২৪ পরগনার আনাজ শুধু কলকাতায় নয়, পাঠানো হয় বিভিন্ন জেলাতেও। বারাসত, আমডাঙা, দেগঙ্গা, দত্তপুকুর, বনগাঁ, বাগদা ও বসিরহাটের মতো এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রচুর আনাজ শহর কলকাতা হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলার কৃষকদের অভিযোগ, লকডাউনের এই সময়ে ফড়েদের জন্যই এমন হাল। তাঁরা ইচ্ছাকৃত ভাবে দাম কমিয়ে রাখায় বাধ্য হয়ে সেই দামেই আনাজ বিক্রি করতে হচ্ছে চাষিদের। আবার এই ফড়েরাই সেই আনাজ অনেক বেশি দামে বিক্রি করছেন কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন বাজারে। এর মাঝে পড়ে এক দিকে যেমন লোকসান হচ্ছে চাষিদের, অন্য দিকে আনাজের আগুন দামে মাথায় হাত পড়েছে গৃহস্থের! লকডাউনের এই টালমাটাল অবস্থায় বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ কেন করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্ষুব্ধ চাষিরা।
দমদম ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা অঞ্জনা রায় বলেন, ‘‘কুমোরপাড়া বাজারে চন্দ্রমুখী আলু কয়েক দিন আগেও ২০ টাকা কেজি দরে কিনেছি। এখন ৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ভাল পটল তো ৫০ টাকার নীচে মিলছেই না।’’
বারাসতের কালিকাপুরের বাসিন্দা স্বাতী আচার্যের কথায়, ‘‘বারাসত স্টেশন এলাকার বাজারে সব আনাজের দাম এক সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে গিয়েছে।’’ দেগঙ্গার শেখের মোড় এলাকার কৃষক তাইজুল গাজি জানালেন, কয়েক দিন আগেও ফড়েদের কাছে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন পটল। আর সম্প্রতি তা বিক্রি হয়েছে ১০ টাকায়। ঢেঁড়শ ২০ টাকা থেকে কমে হয়েছে আট টাকা। উচ্ছে ২৫ থেকে কমে হয়েছে ১০ টাকা। বেগুনের দাম ২০ টাকা থেকে নেমে গিয়েছে আট টাকায়।
এ ব্যাপারে ফড়েদের বক্তব্য, ট্রেন বন্ধ। ট্রাক বা মালবাহী গাড়ি প্রচুর টাকা চাইছে। তাই সব জায়গায় ঠিকমতো আনাজ পাঠানো যাচ্ছে না। যার ফলে শহর ও শহরতলির খুচরো বাজারে দাম বাড়লেও স্থানীয় পাইকারি বাজারে কৃষকেরা আনাজের প্রাপ্য দাম পাচ্ছেন না।
কেন ফড়েদের ধরা হচ্ছে না? জেলা এনফোর্সমেন্ট শাখার আধিকারিক অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায় জানান, স্থানীয় হাটগুলির উপরে নজরদারি চালানো হয়নি। তাই এমন অবস্থা। তিনি বলেন, ‘‘এ বার হাটগুলিতে হানা দিয়ে বাজারদর স্বাভাবিক রাখা হবে। যদি কোনও ফড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ মেলে, তা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy