ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড। —ফাইল চিত্র।
ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের বিকল্প হিসেবে জায়গা দেখা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পাঁচটি জায়গা সরেজমিনে পরিদর্শনও করা হয়েছে। সেখানে সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচশো বাস রাখা যেতে পারে। তবে ওই জায়গাগুলির মধ্যে বেআইনি পার্কিং, দোকান-সহ দখলদারেরা রয়েছে। ফলে তাদের না সরানো পর্যন্ত বাস্তবে মোট ৪০০টি দূরপাল্লার বাস রাখা যেতে পারে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে। ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরিত করার মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে এমনটাই জানাল রাজ্য সরকার।
যার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, বাসস্ট্যান্ড সরানো নিয়ে হাই কোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টও সেই সূত্রে স্থানান্তরিত করার পক্ষে হাই কোর্টের রায়ই বহাল রেখেছে। সেখানে ফের কেন ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড অন্যত্র সরানো নিয়ে মামলা করার প্রয়োজন হল? মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত জানাচ্ছেন, ইচ্ছাকৃত ভাবে রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে গড়িমসি করছে। তা না হলে বাসস্ট্যান্ড সরানোর নির্দেশ বহু আগেই দেওয়া হয়েছিল আদালতের তরফে। রাজ্য সরকার তা পালন করলে এই মামলারই প্রয়োজন হত না! তাঁর কথায়, ‘‘ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালকে যানবাহনের ধোঁয়া-দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা তো বটেই, সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকা যানজট মুক্ত করতেও ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তরিত করা প্রয়োজন। কিন্তু তার পরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।’’
যদিও প্রশাসনের তরফে আদালতকে জানানো হয়েছে, প্রশাসনিক শীর্ষ স্তরের নেতৃত্বে বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকের ভিত্তিতে গত মাসে দু’দফায় ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের বিকল্প হিসেবে একাধিক জায়গা সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে দেখা যায়, সাঁতরাগাছি বাস টার্মিনাসে সর্বাধিক ১০০টি দূরপাল্লার বাস রাখা যেতে পারে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন পড়লে ওই এলাকার সীমান্ত আর বাড়ানো সম্ভব নয়। আবার, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের (কেএমআরসিএল) ভবনের কাছে প্রায় ৫২৫৯ বর্গমিটার জায়গা রয়েছে। সেখানে সর্বাধিক ৬০টি বাস রাখা যেতে পারে বলে পরিদর্শনে দেখা গিয়েছে। একই ভাবে হাওড়ার ফোরশোর রোডে এবং ডিউক রোডের দু’টি জায়গায় যথাক্রমে ২০০টি, ৪০টি এবং ১৫০টি দূরপাল্লার বাস রাখা যেতে পারে।
অর্থাৎ, সব মিলিয়ে পাঁচটি জায়গায় ৫৫০টি বাস রাখা যেতে পারে বলে আদালতকে জানিয়েছে রাজ্য। যদিও ডিউক রোডের যেখানে ১৫০টি বাস রাখার কথা বলা হয়েছে, তা পুরোপুরি দখলদারদের আওতায় রয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে পাঁচটি জায়গায় মোট ৪০০টি বাস রাখা যেতে পারে উঠে আসছে। এক পরিবেশবিদের কথায়, ‘‘এটা সুসংহত পরিকল্পনাই নয়। এ ভাবে ছড়িয়ে বাস রাখায় সমস্যার সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা কম। উল্টে যানজট বৃদ্ধির আশঙ্কাই বেশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy