Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Jadavpur University Student Death

দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা, রেজিস্ট্রারের জবাবে ‘অত্যন্ত অসন্তুষ্ট’ শিশু সুরক্ষা কমিশন

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত ছাত্র নাবালক জানার পরে পদক্ষেপ করে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয় কেন র‌্যাগিং রুখতে ইউজিসির নিয়ম মানেনি তা নিয়ে প্রশ্নও তোলে কমিশন।

West Bengal Child Rights Commission is extremely unhappy with Jadavpur University’s response to the showcause notice.

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ১৮:২৩
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তারা। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শো-কজের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু যে জবাব দিয়েছেন, তা ‘দায়সারা’। তাতে কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রতিফলন ঘটেছে।

কমিশনের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নেওয়ার পরিবর্তে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার সব দায় ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন। তাঁরা ত্রুটি সংশোধন করে ব্যবস্থাপনার সংস্কারের কোনও চেষ্টাই করেননি। র‌্যাগিংয়ের মতো নিয়মবিরুদ্ধ কাজ আটকানোর চেষ্টাও করা হয়নি। কমিশন জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের ত্রুটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সমস্যার সমাধান করার কোনও মানসিকতা নেই তাঁদের।

র‌্যাগিং নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-র নির্দেশাবলি কেন মানা হয়নি? যাঁরা ওই নির্দেশ অমান্য করেছেন, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি? এই প্রশ্নগুলি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়কে আবার নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন।

শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফে উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী গত রবিবার নদিয়ায় মৃত ছাত্রের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়ে এসেছেন তিনি। তার পর কমিশনের প্রতিনিধিরা যাদবপুরের ক্যাম্পাস এবং হস্টেল পরিদর্শন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। অভিযোগ, র‌্যাগিং সংক্রান্ত ইউজিসির নির্দেশিকা যাদবপুরে মানা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাও সেখানে বাস্তবায়িত হয়নি। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কী, জানতে চেয়েছিল কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চিঠি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চিঠি।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে মৃত ছাত্রের নাম এবং পরিচয়ও প্রকাশ্যে এসেছিল। কিন্তু পরে জানা যায়, ছাত্রের বয়স ১৮ বছর হয়নি। তার পরেই আসরে নামে শিশু সুরক্ষা কমিশন। তারা জানায়, ওই ছাত্রের উপর যৌন হেনস্থা হয়ে থাকতে পারে। সেই কারণে এই মামলায় পকসো আইনের ধারাও যুক্ত হতে পারে। সংবাদমাধ্যমের কাছে ছাত্রের নাম এবং ছবি ব্যবহার না করার আবেদন জানায় কমিশন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও যাদবপুরের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছিল। পরে বুধবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় রেজিস্ট্রারকে ইতিমধ্যে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE