ফাইল চিত্র।
বয়স্ক এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ভোটদাতাদের বাড়ি গিয়ে ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় থাকে, তার জন্য আরও কঠোর হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার কমিশনের তরফে হাওড়া জেলা প্রশাসনকে পাঠানো এক নির্দেশে বলা হয়েছে, বাড়ি গিয়ে ব্যালট পেপারে ভোট নেওয়ার জন্য যে বিশেষ দল তৈরি করা হচ্ছে, সেই দলে এক জন মাইক্রো-অবজ়ার্ভার রাখতে হবে। বাড়ি গিয়ে ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে গোপনীয়তা বজায় থাকছে কি না অথবা ভোটদাতাকে কোনও চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে কি না, জেলার নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের প্রতিনিধি হিসেবে সেই দিকে লক্ষ রাখবেন সংশ্লিষ্ট মাইক্রো-অবজ়ার্ভার।
হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এই প্রথম নির্বাচন কমিশন ৮০ বছরের বেশি বয়সি এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের ভোট সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ আসার পরেই ভোটার তালিকা দেখে হাওড়ায় প্রায় পৌনে এক লক্ষ এমন ভোটার চিহ্নিত করা হয়। তাঁরা বুথে গিয়ে ভোট দেবেন না কি বাড়ি থেকেই ভোট দিতে ইচ্ছুক, প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই সেই খোঁজ শুরু করা হয়েছে। হাওড়ায় এমন ৮৭ হাজার ভোটারের বাড়ি গিয়ে ভোট নিতে ৭০৪টি দল তৈরি করছে প্রশাসন। প্রতিটি দলে থাকবেন পোলিং অফিসার, তাঁর এক জন সহকারী ও দু’জন পুলিশকর্মী। তাঁদের
সঙ্গেই থাকবেন এক জন করে মাইক্রো-অবজ়ার্ভার। তাঁরা সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার উপরে নজর রাখবেন।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভোটারেরা কোনও রাজনৈতিক দলের চাপের মুখে পড়ছেন কি না, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় গোপনীয়তা বজায় থাকছে কি না এবং গোটা প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবে হচ্ছে কি না— সেই দিকগুলির উপরেই মূলত নজর রাখবেন মাইক্রো-অবজ়ার্ভারেরা। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বিশেষ ভাবে সক্ষম ভোটারদের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতার শংসাপত্র থাকতে হবে। পাশাপাশি, পুরো ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ভিডিয়োগ্রাফি করারও নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট প্রক্রিয়া মিটে যাওয়ার পরে প্রতিটি দল থেকে মাইক্রো-অবজ়ার্ভারেরা জেলার নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, গোটা প্রক্রিয়াটি এ বারই প্রথম। তাই নির্বিঘ্নে সেটি শেষ করা বড় চ্যালেঞ্জ তাঁদের কাছে।
ওই কর্তা বলেন, ‘‘বিভিন্ন ভোটদাতার বাড়ি থেকে এখনও পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা ছাড়া ৮০ বছরের বেশি অনেক ভোটদাতাই বুথে গিয়ে ভোট দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে ৮৭ হাজার এমন ভোটারের মধ্যে ঠিক কত জন বাড়িতে বসে ভোট দেবেন, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচনী পর্যবেক্ষকেরা চলে এলেই মাইক্রো-অবজ়ার্ভারদের নিয়োগ করা হবে। মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের পদস্থ অফিসার এবং জীবন বিমা নিগমের অফিসারেরাই মাইক্রো-অবজ়ার্ভার হিসেবে নিযুক্ত হবেন বলে খবর। ভোট প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য ভোটদাতাকে একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে এবং ব্যালট পেপারে টিক চিহ্ন দিয়ে ভোট দিতে হবে। ভোট দেওয়ার পরে ওই ব্যালট পেপারটি একটি খামে পুরে সেটির মুখ বন্ধ করে পোলিং অফিসার সিল করে দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy