Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
TMC

WB Municipal Election 2022: দমদমের তিন পুরসভায় বামেদের প্রাপ্তি দ্বিতীয় স্থান

তিনটি পুরসভার নির্বাচনেই বুথ দখল, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। একটি ওয়ার্ডের একটি বুথে পুনর্নির্বাচনও হয়। সে সব জায়গাতেও জয় এসেছে ঘাসফুলে। তবে সিপিএম নেতা পলাশ দাসের মতে, ‘‘ছাপ্পা, রিগিংয়ের ভিত্তিতে এই প্রহসন।’’ একই অভিযোগে সরব বিজেপি নেতা অরিজিৎ বক্সীর বক্তব্য, ‘‘দলগত ভাবে নির্বাচন বাতিলের দাবি করা হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

কাজল গুপ্ত, আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ০৬:২৮
Share: Save:

দমদমের তিন পুরসভায় বিপুল ব্যবধানে প্রথম স্থান ধরে রাখল তৃণমূল। তবে গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে বিজেপিকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল বামেরা।

ফলাফল বেরোতেই দেখা গেল, দমদম পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। ফলে বিরোধী শূন্য হয়েছে ওই পুরসভা। দক্ষিণ দমদমের ৩৪টি ওয়ার্ডের ৩২টি-তে তৃণমূল এবং ২টি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। ওই পুরসভার জয়ী দুই নির্দল প্রার্থী আদতে বহিষ্কৃত তৃণমূল। যাঁরা কাগজেকলমে বিরোধী মুখ। উত্তর দমদমে ৩৪টি ওয়ার্ডের ৩৩টি তৃণমূলের দখলে। বিরোধীদের কব্জায় যাওয়া একটি ওয়ার্ডে সিপিএমের মহিলা প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

গত বিধানসভার ফলাফল বিচার করলে দেখা যাবে, তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান যেমন বেড়েছে, তেমনই বামেদেরও ভোট বেড়েছে। জয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের মধ্যে দমদমের বরুণ নট্ট, উত্তর দমদমের সুবোধ চক্রবর্তী, দক্ষিণ দমদমের কেয়া দাস, অভিজিৎ মিত্রের কথায়, ‘‘ভোট অনেকটাই বেড়েছে। ফলে দায়িত্বও ততটাই বাড়ল।’’ এ দিকে, দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। যদিও জয়ী নির্দল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের (ফুচু) কথায়, ‘‘মানুষ আমাকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক মনে করেন। কিছু মানুষের ষড়যন্ত্রে টিকিট পাইনি। মানুষ জবাব দিয়েছেন।’’

ষড়যন্ত্রের কথা উড়িয়ে দলের অন্দরের খবর, দেবাশিসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠছিল। তা ছাড়া তাঁর বিপুল বৈভব সংক্রান্ত বিষয়টিও টিকিট না-পাওয়ার অন্যতম কারণ। যা খারিজ করে দিয়েছেন ৯২ শতাংশ ভোট
পেয়ে জয়ী নির্দল প্রার্থী। তাঁর জয়ের ব্যবধান ৪৩৫২। তৃতীয় স্থানে থাকা তৃণমূল প্রার্থী অজয় মুখোপাধ্যায় পেয়েছেন মাত্র তিন শতাংশ ভোট। ওই পুরসভার ন’নম্বর ওয়ার্ডে ২২৮৬ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থী রীতা রায়চৌধুরী। নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি এবং তাঁর স্বামী, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুরজিৎ রায়চৌধুরীকে ঘিরে সরগরম হয়েছিল দক্ষিণ দমদমের রাজনীতি।

স্থানীয় বিধায়ক তথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থীর জয় প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘দেবাশিস টিকিট না পেলেও তাঁকে মানুষ তৃণমূলের মুখ হিসেবেই দেখেছেন।’’ তবে কি নির্দল প্রার্থীদের দলে ফেরানো হবে? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘দল সেই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

উত্তর দমদমের একমাত্র বিরোধী মুখ ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী সিপিএম প্রার্থী সন্ধ্যারানি মণ্ডল। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত সিপিএম প্রার্থী তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুনীল চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের ভোট-দৌরাত্ম্য কিছুটা আটকানো গিয়েছে বলে জয় এসেছে।’’ অভিযোগ মানতে চাননি জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বিধান বিশ্বাস।

তিনটি পুরসভার নির্বাচনেই বুথ দখল, সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। একটি ওয়ার্ডের একটি বুথে পুনর্নির্বাচনও হয়। সে সব জায়গাতেও জয় এসেছে ঘাসফুলে। তবে সিপিএম নেতা পলাশ দাসের মতে, ‘‘ছাপ্পা, রিগিংয়ের ভিত্তিতে এই প্রহসন।’’ একই অভিযোগে সরব বিজেপি নেতা অরিজিৎ বক্সীর বক্তব্য, ‘‘দলগত ভাবে নির্বাচন বাতিলের দাবি করা হয়েছে। এই ফলাফলে প্রকৃত চিত্র মিলবে না।’’ কংগ্রেস নেতা তাপস মজুমদারের মতে, তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ের ব্যবধানেই স্পষ্ট, আদতে কী হয়েছে।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, ‘‘জনকল্যাণমূলক প্রকল্প ও মানুষের পাশে থাকার প্রতিফলন এ দিনের ফলাফল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Dumdum Municipality WB Municipal Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE