নারকীয়: খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারে জমা জল পেরিয়েই যাতায়াত। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুমন বল্লভ
বাজারের মধ্যে জল থই থই করছে। দু’সপ্তাহ ধরে সেই নোংরা জল জমে থাকায় আসতে পারছেন না ক্রেতারা। শুধু তা-ই নয়, জমা জলের কারণে বেড়েছে মশার উপদ্রবও। খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারের এ হেন দৈন্যদশায় ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। তাঁদের অভিযোগ, নিকাশির বেহাল অবস্থার জন্য এই পরিস্থিতি। পুরসভাকে একাধিক বার জানিয়েও লাভ হয়নি। যদিও ব্যবসায়ীদের যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে পুরসভার ৯ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন তথা ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাজারের ভিতরে জমে থাকা জল পুজোর সময়ে পাম্প করে বার করা হয়েছিল। গঙ্গার জলের কল থেকে পলি বেরিয়ে কাছেই নিকাশি নালার পাইপ বসে যাওয়ায় এই সমস্যা হয়েছে। সমস্যার সমাধানে বাজারের বাইরে নিকাশির লাইন মেরামত করা হচ্ছে। সেই কাজ শেষ হলে আর জল জমবে না।’’
ব্রিটিশ আমলে তৈরি অরফ্যানগঞ্জ বাজার একাধিক সমস্যায় ধুঁকছে। রাজ্য সরকার পরিচালিত এই বাজারটি বছরখানেক আগে হাতে নেয় কলকাতা পুরসভার বাজার দফতর। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তার পরেও এটির বেহাল অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বাজারে পর্যাপ্ত আলো নেই। বিভিন্ন জায়গায় স্তূপীকৃত হয়ে থাকে আবর্জনা। বাজার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নেই সাফাইকর্মীও। এই বাজারে প্রায় ১৩০০ ব্যবসায়ী রয়েছেন। আনাজ, ফল, মাছ-মাংস, চা, মশলাপাতি থেকে শুরু করে বহু জিনিস কেনাবেচা হয়। বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গৌর সাহার অভিযোগ, ‘‘এই অবস্থার জন্য দায়ী পুরসভা। তারা বছরখানেক আগে বাজারটি অধিগ্রহণ করলেও একফোঁটা উন্নয়ন হয়নি। টানা দু’সপ্তাহ জল জমে থাকায় সেখানে ডিম পাড়ছে মশা। একাধিক ব্যবসায়ী জ্বরে আক্রান্ত। এখন ডেঙ্গিতে ছেয়ে গিয়েছে দক্ষিণ কলকাতা। বাজারে টানা কয়েক দিন জল জমে থাকায় ভীষণ আতঙ্কে আছি।’’
যদিও পুরসভার বাজার দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন ববি সব দায় ব্যবসায়ীদের উপরে চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাজারটি অধিগ্রহণ করলেও ব্যবসায়ীরা ভাড়া দিচ্ছেন না। তাঁদের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠক করে দোকানের প্রামাণ্য নথিপত্র জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বিন্দুমাত্র সহায়তা না করায় আমরা ওই বাজারে কোনও পরিষেবা দিতে পারছি না।’’ বাজারে দু’সপ্তাহ ধরে জল জমে থাকার প্রসঙ্গে মেয়রপারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ‘‘এই সমস্যার যাতে দ্রুত সমাধান হয়, তা দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy