অপচয়: এ ভাবেই রোজ ট্যাঙ্ক থেকে জল বেরিয়ে যায় সল্টলেকের বিচিত্রা আবাসনে। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি আবাসনের প্রায় ৫০ শতাংশ ফ্ল্যাট ফাঁকা পড়ে আছে। তা সত্ত্বেও সেই সব ফ্ল্যাটের জন্য বরাদ্দ জল প্রতিদিন পড়ে নষ্ট হচ্ছে। না হলে, ওই আবাসনের যে সব ফ্ল্যাটে লোকজন থাকেন, সেই ফ্ল্যাটগুলির ট্যাঙ্কে জল উঠবে না। সল্টলেকের তিন নম্বর আইল্যান্ডের কাছে এই ছবি খোদ রাজ্য সরকারের নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন ‘বিচিত্রা’ আবাসনে। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
প্রখর গরমে বিভিন্ন জায়গার মতো বিধাননগরেও জলের চাহিদা বেড়েছে। রাতে অতিরিক্ত জল দিচ্ছে পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সল্টলেকের সরকারি আবাসনগুলিতেও পুরসভার জলাধার থেকেই জল যায়। সেখানে এই ভাবে রোজ জল নষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কেন নগরোন্নয়ন দফতর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন আবাসনের বাসিন্দা এবং পুর কর্তৃপক্ষও। তাঁদের আরও প্রশ্ন, জল সংরক্ষণ করতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে ‘জল ধরো, জল ভরো’ কর্মসূচি নিয়েছেন, সেখানে এ ভাবে জল অপচয় হচ্ছে আর তা কারও নজরে পড়ছে না?
বিচিত্রা আবাসনের বাসিন্দারা জানান, তাঁরা সকাল, দুপুর ও বিকেল— তিন বেলা জল পান। আবাসনের ১৩টি বহুতলের প্রতিটিতে আটটি করে মোট ১০৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রতিটি বহুতল চারতলা। প্রতিটি তলে দু’টি করে মোট আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে। সেই হিসাবে প্রতিটি বহুতলের ছাদে আটটি করে জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে।
সমস্যা হচ্ছে কী ভাবে? আবাসিকেরা জানান, আবাসনের প্রায় অর্ধেক ফ্ল্যাট খালি। সেই সব ফ্ল্যাটের ট্যাঙ্কগুলি এমনিতে জল ভর্তিই থাকে। কিন্তু যে সব ফ্ল্যাটে লোকজন আছেন, তাঁরা জল ব্যবহার করায় ওই সব ফ্ল্যাটের ট্যাঙ্ক খালি হয়ে যাচ্ছে। পাইপলাইন এমন ভাবে তৈরি করা যে, খালি ট্যাঙ্কে জল পাঠাতে গেলে ভর্তি ট্যাঙ্কের জল ফেলে দিতে হবে। আর এর জেরেই প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ জল।
আবাসিকদের অভিযোগ, শুধুমাত্র সরকারি স্তরে উদাসীনতার কারণেই এত জল রোজ নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে বুধবার নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব এবং ম্যানেজার পর্যায়ের দুই আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাঁরা জানান, এই সমস্যাটি তাঁদের দেখার কথা নয়।
সরকারি আবাসনে এ ভাবে জল অপচয়ের ঘটনায় হতাশ বিধাননগর পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ তুলসী সিংহরায়। তিনি বলেন, ‘‘শুধু ওই আবাসনই নয়, বিজে ব্লকেও নগরোন্নয়ন দফতরের একটি আবাসনে একই ভাবে জল নষ্ট হচ্ছে। আমরা একাধিক বার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও সমস্যার সুরাহা হয়নি।’’
বিষয়টি জেনে ক্ষুব্ধ বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, ‘‘আমি নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকে অবশ্যই জানাব। সরকার জলের জন্য যেমন কর নেয় না, তেমনই জলের অপচয় বরদাস্ত করা হবে না।’’ ঘটনা প্রসঙ্গে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানতাম না। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy