ফাইল চিত্র।
এ বারের পুজোয় মণ্ডপসজ্জায় থার্মোকল ব্যবহার করলে হতে পারে জরিমানা। কারণ গত ১ জুলাই থেকে শুধু এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকই নয়, থার্মোকলের ব্যবহারের উপরেও পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। সেখানে থার্মোকলের থালা-বাটি তো বটেই, মণ্ডপসজ্জার ক্ষেত্রে থার্মোকলের ব্যবহারেও বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। যার ফলে ‘বিপাকে’ পড়েছেন পুজোকর্তাদের একাংশ।
কারণ এককালীন ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানলেও মণ্ডপসজ্জায় থার্মোকলও যে ব্রাত্য, তা অনেকেই জানেন না। যেমন দক্ষিণ কলকাতার এক পুজো উদ্যোক্তার কথায়, ‘‘প্লাস্টিক তো বন্ধই। তবে থার্মোকলেও নিষেধাজ্ঞার কথা জানতাম না।’’ শহরের পুজো উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সভাপতি কাজল সরকারজানাচ্ছেন, থার্মোকলের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তাঁরও জানা ছিল না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তবে এক দিক থেকে ভালই। পরিবেশ দূষিত করে এমন সব কিছু বর্জন করা উচিত।’’ মধ্য কলকাতার এক পুজো উদ্যোক্তার কথায়, ‘‘মণ্ডপসজ্জার ক্ষেত্রে এত দিন থার্মোকল অপরিহার্য ছিল। এ কাজে দক্ষ কারিগর রয়েছেন। এখন তাঁরা কী করবেন?’’
প্রসঙ্গত, জুনের শেষে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, অরণ্য ও জলবায়ু মন্ত্রক নির্দেশিকা জারি করে প্লাস্টিকের তৈরি ‘ইয়ার বাডস’, বেলুনের কাঠি, পতাকা, লজেন্স ও আইসক্রিমের স্টিক, প্লেট, কাপ, গ্লাস, চামচ, ছুরি, স্ট্র, ট্রে, মিষ্টি বা খাবারের প্যাকেট বাঁধার জন্য ফিল্ম, আমন্ত্রণপত্র, সিগারেট প্যাকেট ও ব্যানার (১০০ মাইক্রনের নীচে) সারা দেশে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে। সাজানোয় ব্যবহৃত থার্মোকল, থার্মোকলের থালা, প্লেট, গ্লাস-সহ একাধিক সামগ্রীও বাতিল করা হয়েছে।
যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য পরিবেশ দফতর জানিয়েছে, এই নির্দেশ অগ্রাহ্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পরিবেশ (সুরক্ষা) আইন, ১৯৮৬-র ১৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নির্দিষ্ট ধারায় প্রয়োজনে জরিমানা করা হবে।
রাজ্য প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের একাধিক দফতর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণপর্ষদের পাশাপাশি স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি, রাজ্যের সব জেলাশাসক, পুর কমিশনার/এগ্জিকিউটিভ অফিসার, সাব ডিভিশনাল/ ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার, কমিশনার/ সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ, সব থানারঅফিসার ইন চার্জ-সহ প্রত্যেককে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এখনও লুকিয়ে-চুরিয়ে এককালীন প্লাস্টিক বা থার্মোকল বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। সেগুলির বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।পুজোর সময়ে নজরদারি চালাতে বাড়তি সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’
ফলে এই পরিস্থিতিতে স্বভাবতই ‘চাপে’ রয়েছেন পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ। উত্তর কলকাতার এক পুজোকর্তার কথায়, ‘‘থার্মোকলের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হওয়াটা ভাবনার বিষয়। কিছু করার নেই, যা নিয়ম তা তো মানতেই হবে।’’
তবে দক্ষিণ কলকাতার একডালিয়া এভারগ্রিন পুজোর কর্মকর্তা স্বপন মহাপাত্র বলছেন, ‘‘প্লাস্টিক, থার্মোকল কোনওটাই ব্যবহার করি না। পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতেই পুজো করা হবে।’’ কিন্তু অনেক সময়েই পুজোর ভোগ বা খাবারেরআয়োজনে থার্মোকলের থালা, গ্লাস ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে? উত্তর কলকাতার কাশী বোস লেনের কর্মকর্তা সোমেন দত্ত বলছেন, ‘‘ভোগ বিতরণের ক্ষেত্রে আমরা শালপাতার বাটি ব্যবহার করি। গত দু’তিন বছর ধরেই মণ্ডপসজ্জায় প্লাস্টিক, থার্মোকলের ব্যবহার করছি না। পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy