ধ্রুব বিশ্বাস।
দু’জনের বাড়ি প্রায় পাশাপাশি। তারা পড়তও একই স্কুলে। দু’জনের মা-ই এ দিন সন্তানদের পরীক্ষার কাগজপত্র জমা দেওয়া সংক্রান্ত কাজে স্কুলে গিয়েছিলেন। আর সেই সুযোগে বিরাট পুকুরে স্নান করতে নেমেছিল দুই বন্ধু। কোনও ভাবে এক জন ঘাট থেকে পা পিছলে জলে পড়ে গেলে অন্য জন তাকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। জলে ডুবে মৃত্যু হল দু’জনেরই।
মঙ্গলবার দুপুরের এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত মধ্যমগ্রামের পশ্চিম চণ্ডীগড় এলাকা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দুই কিশোরের নাম ধ্রুব বিশ্বাস (১৪) এবং পবিত্র সাহা (১৩)। পুকুরঘাটে পা পিছলে প্রথমে জলে পড়ে যায় ধ্রুব। বন্ধুকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেয় পবিত্র। তাদের উদ্ধার করে বারাসত মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ধ্রুবকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল জানান, পবিত্রের ফুসফুসে জল জমে গিয়েছিল। তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা শুরু করা হলেও বাঁচানো যায়নি। সন্ধ্যার দিকে মৃত্যু হয় পবিত্রেরও।
স্থানীয়েরা জানান, দুপুর দেড়টা নাগাদ দুই বন্ধু জলে নেমেছিল। কোনও ভাবে ধ্রুব পা পিছলে পুকুরে পড়ে যায়। তাকে হাত-পা ছুড়তে দেখে জলে ঝাঁপ দেয় পবিত্র। ওই পুকুরের পাশেই থাকেন রিপন বিশ্বাস। তিনি জানান, সাঁতার না জানায় পবিত্রকে জলের মধ্যে আঁকড়ে ধরে ধ্রুব। তার জেরে
সাঁতার জানা সত্ত্বেও পবিত্রও ডুবে যায়। প্রচুর জল খেয়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় কয়েক জন পুকুরে ঝাঁপ গিয়ে দুই কিশোরকে উদ্ধার
করেন। পুকুরপাড়েই ধ্রবকে শুইয়ে তার পেট থেকে জল বার করার চেষ্টা হয়। কিন্তু জলের সঙ্গে রক্তও বেরোতে থাকে বলে জানাচ্ছেন
প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মধ্যমগ্রাম পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই পুকুরে সব সময়ে বাচ্চারা স্নান করতে নামে। এ দিনের ঘটনার পরে পুকুরের চার পাশ উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ধ্রুবর কাকিমা প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস জানান, মধ্যমগ্রাম কবিগুরু স্কুলের ছাত্র ছিল দুই বন্ধু। কাউকে না জানিয়েই এ দিন তারা পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল। দুপুরের দিকে বাড়ির লোকজন দুর্ঘটনার খবর পান।
পবিত্রের বাবা পলাশবাবু পেশায় বস্ত্র ব্যবসায়ী। তাঁর কর্মস্থল ঝাড়খণ্ডে। ছেলের মৃত্যুর খবর এ দিন রাত পর্যন্ত তাঁকে জানানো হয়নি। পলাশবাবু শুধু শুনেছেন, ছেলের দুর্ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে তিনি ঝাড়খণ্ড থেকে রওনা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy