ফাইল চিত্র।
গর্ভাবস্থায় যমজ সন্তানের কিছু জটিলতা বড় বিপত্তি ডেকে আনে। অনেক সময়েই দেখা যায়, সেই জটিলতার কারণে একটি ভ্রূণের মৃত্যু ঘটছে, পরে অন্যটিও মারা যাচ্ছে। বিদেশে বা ভিন্ রাজ্যে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিপত্তি আটকে একটিকে বাঁচানো হয়ে থাকে। তবে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের দাবি, পূর্বাঞ্চলে সেই ‘ইন্টারস্টিশিয়াল ডায়োড লেজ়ার থেরাপি’র মাধ্যমে এক দম্পতির মুখে প্রথম হাসি ফোটাল তারা।
বিয়ের ১৩ বছর পরেও সন্তানহীন ছিলেন ওই দম্পতি। আইভিএফ পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বা হন ওই বধূ। পরীক্ষায় দেখা যায়, গর্ভস্থ দু’টি ভ্রূণ একটি জরায়ুর ফুলের (প্লাসেন্টা) মাধ্যমে যুক্ত। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ভ্রূণ ও মায়ের জরায়ুর প্রাচীরের ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপন করে এই প্লাসেন্টা। যার মাধ্যমে মা ও ভ্রূণের মধ্যে বিভিন্ন পদার্থের আদানপ্রদান ঘটে। অর্থাৎ, মায়ের শরীর থেকে ওই জরায়ুর ফুলের মাধ্যমেই বিকাশের রসদ পায় ভ্রূণ।
প্রায় সাড়ে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই বধূকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখেন, তাঁর যমজ ভ্রূণ ‘মনোকোরিয়োনিক’। যার অর্থ, একটি ডিম্বাণু এবং একটি শুক্রাণু থেকে দু’টি ভ্রূণ তৈরি হয়েছে। এবং জরায়ুর একই প্রকোষ্ঠে একই রক্তপ্রবাহে তারা পুষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, এমন হলে গর্ভস্থ একটি শিশু বেশি পুষ্টি পায়, অন্য জন অপুষ্টিতে ভুগতে থাকে। দুর্বল শিশুটির রক্ত জমাট বাঁধলে কিংবা হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা তৈরি হলে তা জরায়ুর ফুলের মাধ্যমে সুস্থ শিশুর মধ্যেও প্রবেশ করে। ফলে গর্ভস্থ দুর্বল শিশুর মৃত্যুর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুস্থটিও মারা যায়।
ওই বধূর চিকিৎসায় সম্প্রতি অ্যাপোলো হাসপাতালে ‘ইন্টারস্টিশিয়াল ডায়োড লেজ়ার থেরাপি’র মাধ্যমে একটি শিশুকে নতুন জীবন দেওয়া হল। এই পদ্ধতিতে একটি সূক্ষ্ম সুচ জরায়ুতে প্রবেশ করিয়ে দু’টি ভ্রূণের মধ্যের ধমনীগুলি কেটে দেওয়া হয়। ফলে দুর্বল শিশুটির পুষ্টি বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে। আর সুস্থ ভ্রূণটির প্রাণসংশয় কেটে স্বাভাবিক বিকাশ ঘটে। হাসপাতালের স্ত্রী ও বন্ধ্যত্ব রোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক জয়ন্তকুমার গুপ্ত এবং অন্য তিন চিকিৎসক, কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়, সীতা রামমূর্তি পাল ও সুমনা হক প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছেন।
জয়ন্ত বলেন, “জন্মের আগেই যমজদের এক জনকে ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া বাবা-মায়ের পক্ষে খুবই শক্ত। কিন্তু অন্তত এক জনকে বাঁচানোর এটাই একমাত্র পদ্ধতি।’’
তিনি জানান, আগামী দিনে এই পদ্ধতিতে আরও বেশি করে টুইন-টু-টুইন-ট্রান্সফিউশন সিনড্রোমে আক্রান্ত গর্ভবতীদের একটি সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy