আটকে: বেলগাছিয়া রোডে পরপর দাঁড়িয়ে বাস। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
পুজো দেখার ভিড়ের জন্য নয়। সোমবার, দ্বিতীয়ার সকাল থেকেই উত্তর কলকাতা এবং উত্তর শহরতলির বিভিন্ন রাস্তায় যানবাহনের গতি শ্লথ হল টালা সেতুর জন্য।
বিপজ্জনক টালা সেতুতে আগেই বন্ধ হয়েছিল মালবাহী ভারী যান চলাচল। রবিবার থেকে বাস চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ দিন টালা সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী বাস ঘুরিয়ে চিড়িয়ামোড় থেকে দমদম রোড, ইন্দ্র বিশ্বাস রোড কিংবা নাগেরবাজার-যশোর রোড দিয়ে পাঠানো হয়েছে বেলগাছিয়া-শ্যামবাজারের দিকে। পুলিশ জানিয়েছে, অতিরিক্ত বাস ওই সব রাস্তা দিয়ে চলায় এ দিন সকাল থেকে বেলগাছিয়া রোড, যশোর রোড, ইন্দ্র বিশ্বাস রোড, এ পি সি রোড, ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ, দমদম রোড, রাজা মণীন্দ্র রোডে গাড়ি চলাচল বাধা পেয়েছে। তাতেই ভোগান্তি হয়েছে সাধারণ মানুষের। বিকেলেও ওই যানজটে নাকাল হন লোকজন।
এ দিন সকালে বেলগাছিয়া সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, দু’দিকেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, কোন বাস কোন দিকে যাবে, বাসস্ট্যান্ডে তার কোনও দিক-নির্দেশ কেউ দেননি। বাসের রুট নিয়ে বিভ্রান্ত হয়েছেন যাত্রীরা।
সকাল দশটা নাগাদ সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিড়িয়ামোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আশা মণ্ডল। টালা সেতুর কাছেই ছেলের স্কুল। তিনি জানান, প্রতিদিন চিড়িয়ামোড় থেকে সোজা বাস ধরে ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যান। কিন্তু এ দিন বাস ঘুরিয়ে দেওয়ায় তিনি এবং তাঁর মতো অনেকেই সমস্যায় পড়েন। অচেনা রুটে বাস ঘুরে যাওয়ায় সামান্য পথ পার হতেও দীর্ঘ সময় লেগেছে অনেকেরই।
বরাহনগরের বাসিন্দা প্রতিম বসুর দাবি, এ দিন দুপুরে বরাহনগর থেকে শ্যামবাজার পৌঁছতে তাঁর এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। অন্য দিন সময় লাগে আধ ঘণ্টা। কেউ কেউ আবার চিড়িয়ামোড় থেকে অ্যাপ ক্যাব ধরে শ্যামবাজার হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। অনেকে আবার মেট্রোয় গন্তব্যের দিকে রওনা দিয়েছেন।
পুলিশের দাবি, এমনিতেই প্রতিদিন দমদম স্টেশনের আন্ডারপাস, বেলগাছিয়া রোড এবং শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে ব্যস্ত সময়ে গাড়ির চাপ বেশি থাকে। তার মধ্যে এ দিন অতিরিক্ত বাস ওই সব রাস্তায় ঢুকে পড়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এ দিন শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে দেখা যায় ২৩০, ২৩৪, ৭৮/১ রুটের বাস নির্ধারিত যশোর রোড বা ভিআইপি রোডে না উঠে বেলগাছিয়া রোড দিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু বাসের জন্য বিকল্প রুট বার করতে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে পরিবহণ দফতরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘পরিবহণ দফতরের নির্দেশ মেনে যাতে নির্দিষ্ট রুটে বাস চলে, তার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’
এ দিন দুপুর এবং বিকেলে চিড়িয়ামোড় থেকে নর্দার্ন অ্যাভিনিউ হয়ে বেলগাছিয়া রোডে গিয়ে দেখা যায়, সকালের মতোই বেলগাছিয়া রোডে বাসের লম্বা লাইন। একই চিত্র দেখা যায় এ পি সি রোডে। শ্যামবাজারমুখী গাড়ির লম্বা লাইন তখন প্রায় খন্না মোড়কে ছুঁয়ে ফেলেছে। শ্যামবাজার ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে আধিকারিকেরা রাস্তায় নেমে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে অতিরিক্ত গাড়ি তাঁদের সেই প্রচেষ্টায় মাঝে মধ্যেই জল ঢেলে দিয়েছে। লালবাজারের দাবি, বিকেলের পরে পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। আগামী দিনে অতিরিক্ত বাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া চেষ্টা করা হবে বলেও লালবাজার জানায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy