প্রতীকী ছবি।
রাস্তার মাঝখানে দাঁড় করানো গার্ডরেল। পাশে উর্দি পরে দাঁড়িয়ে জনা দশেক পুলিশকর্মী। বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক ছোটালে বা হেলমেট না পরলেই সেই চালকদের দাঁড় করিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন ওই পুলিশকর্মীরা। উর্দিধারী ওই পুলিশকর্মীদের পাশেই দাঁড়িয়ে তিন যুবক। তাঁরা ওই পুলিশকর্মীদের নির্দেশ মতো কখনও ট্র্যাফিক আইন অমান্যকারী চালকদের গাড়ি আটকাচ্ছেন। কখনও আবার তাঁদের সাহায্য করছেন নাকা তল্লাশি চালাতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তিন যুবক আসলে একটি কুরিয়র সংস্থায় ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশে তাঁরা গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতি রাতে তিন ঘণ্টা করে বেহালায় পুলিশের যে নাকা তল্লাশি চলছে, সেই কাজে সাহায্য করছেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতেও ‘ডিউটি’ করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। অভিযোগ, ওই তিন যুবক পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছিলেন। তাই বেহালা থানা তাঁদের গ্রেফতার করে গত ১৬ জুলাই আলিপুর আদালতে তুলেছিল। সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর চট্টোপাধ্যায় জানান, ধৃত তিন যুবককে শর্তাধীন জামিন দেওয়া হয়। আলিপুরের এসিজেএম আদালতের বিচারক সুব্রত মুখোপাধ্যায় জামিনের শর্ত হিসেবে তিন অভিযুক্তকে আগামী তিন মাস সপ্তাহে তিন দিন পুলিশকে নাকা তল্লাশির সময়ে সাহায্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও তাঁদের থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। ওই নির্দেশের ফলেই ধৃত তিন অভিযুক্ত, অর্থাৎ শিবেন্দু সিংহ, বিশ্বজিৎ মণ্ডল এবং প্রতিম পাইক বেহালা থানায় গিয়ে পুলিশকর্মীদের নাকা তল্লাশির কাজে সাহায্য করছেন।
আদালতের ওই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা। তাঁদের একাংশের মতে, পুলিশের সঙ্গে কাজ করার ফলে ওই যুবকেরা আগামী দিনে পুলিশকর্মীদের কাজে বাধা দেবেন না বলেই মনে হয়। আবার তাঁদের মনোভাবেরও পরিবর্তন ঘটবে বলে আশা পুলিশের কর্তাদের।
লালবাজার জানিয়েছে, গত ১৫ জুলাই রাতে বেহালা থানা ও জেমস লং সরণি ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশ বুড়োশিবতলা এবং সত্যেন রায় রোডের মোড়ে নাকা তল্লাশি চালাচ্ছিল। ওই তল্লাশিতে হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালানোর জন্য পুলিশের হাতে ধরা পড়েন সরশুনার বাসিন্দা শিবেন্দু সিংহ। পুলিশের দাবি, জেমস লং সরণি ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট তাঁকে আইন অমান্য করার জন্য জরিমানা করেন। সেই জরিমানা মিটিয়ে তখনকার মতো ফিরে যান শিবেন্দু। অভিযোগ, পরে তাঁর দুই বন্ধু, টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মণ্ডল এবং প্রতিম পাইককে নিয়ে সেখানে ফিরে আসেন তিনি। কেন পুলিশ জরিমানা করেছে, তা নিয়ে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন। এমনকি, পুলিশের কাজেও বাধা দেন ওই তিন যুবক। এর পরেই থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করেন।
বুধবার শিবেন্দু, বিশ্বজিৎ এবং প্রতিম জানান, আদালত যা সাজা দিয়েছে, তা তাঁরা পালন করছেন। পুলিশকর্মীরা যেমন বলছেন, নাকা তল্লাশির সময়ে তেমনটাই করছেন তাঁরা। তবে বিশ্বজিতের আক্ষেপ, সারা দিন কুরিয়র সংস্থার কাজের পরে রাতে খাবার পৌঁছনোর কাজ করতেন তিনি। কিন্তু নাকা তল্লাশিতে থাকার ফলে সেটি হচ্ছে না। যার ফলে তাঁর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি ওই যুবকের।
আনন্দপুর থানা এলাকায় কসবা ট্র্যাফিক গার্ডের এক অফিসারকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় বিক্রান্ত সিংহ নামে এক মোটরবাইক চালক। বুধবার আলিপুর আদালত তাঁকে জামিন দেয় এবং সপ্তাহে তিন দিন পুলিশকে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে নির্দেশ দিয়েছে ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy