(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি, দুলাল সরকার এবং কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা তথা ইংরেজবাজারের কাউন্সিলর দুলাল সরকার খুনে ধৃত মালদহ সদরের তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি আগেই হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। এমনই দাবি করলেন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তিনি জানান, মালদহ শহর তৃণমূলের সভাপতির সঙ্গে ইংরেজবাজারের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দুলালের পুরনো গন্ডগোল ছিল। আগেও দুলালকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুঁশিয়ারি দেন নরেন। বস্তুত, দুলাল-খুনে দলের আর এক নেতা নরেন্দ্রনাথকেই ‘মূল হোতা’ বলে মনে করছেন কৃষ্ণেন্দু। পুর চেয়ারম্যানের সন্দেহ, স্বপন শর্মাদের দিয়ে দুলালকে খুন করিয়েছেন ইংরেজবাজারের প্রাক্তন কাউন্সিলর নরেন্দ্রনাথ। যদিও এই হত্যাকাণ্ডকে ‘রাজনৈতিক’ বলতে রাজি নন কৃষ্ণেন্দু।
গত ২ জানুয়ারি মালদহের ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের কারখানার কাছে খুন হন তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্রাণ বাঁচাতে কারখানায় ঢুকে পড়েছিলেন তৃণমূল নেতা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তিন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। তৃণমূল নেতার মৃত্যুর কারণ নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন স্ত্রী চৈতালি সরকার।
অন্য দিকে, খুনের তদন্তে নেমে মঙ্গলবার তৃণমূলের শহর সভাপতি তথা হিন্দি সেলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাকড়াও করা হয় স্বপন শর্মা নামে এক ব্যক্তিকেও। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে, দুলালের সঙ্গে নরেন্দ্রনাথের বিরোধ অনেক পুরনো। বুধবার নরেন্দ্রনাথকে যখন পুলিশের ভ্যানে তোলা হয়, তখন তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘বড় মাথা রয়েছে। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। বড় মাথার বিপদ।’’
কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ বলছেন, কিছু দিন আগে এক বার নরেন্দ্রনাথ শাসানি দিয়ে বলেছিলেন, দুলালকে তিনি মেরেই ছাড়বেন। ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘এর আগেও ওদের গন্ডগোল হয়েছে। তবে এটা রাজনৈতিক নয়। আর স্বপন শর্মা নামে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে সিপিএমের আমলে ‘কন্ট্র্যাক্ট কিলার’ (ভাড়াটে খুনি)। আমার উপরেও ও ১৭ বার হামলা করেছে। জেলেও গিয়েছে। একটা মামলায় সম্প্রতি জামিন পেয়ে জেলের বাইরে ছিল।’’
কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ জানান, দুলালের খুনের কথা তিনিই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী দ্রুত পুলিশি তদন্তের আশ্বাস দেন। পুরসভার চেয়ারম্যান জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কথা অনুযায়ী কাজ করছেন। এই খুনের সঙ্গে যে-ই জড়িত থাকুন, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালে পুরসভার ভোটে দুলালের গোষ্ঠী নরেন্দ্রনাথের এক ভাইকে মারধর করেছিল। দুলালের খুনের সঙ্গে গোষ্ঠীকোন্দলের যোগ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। দুলাল খুনে এ পর্যন্ত যে সাত জনকে পাকড়াও হয়েছেন, তাঁদের নাম শামি আখতার, টিঙ্কু ঘোষ, মোহাম্মদ আব্দুল গনি, অভিজিৎ ঘোষ, অমিত রজক, নরেন্দ্রনাথ এবং স্বপন। এঁদের মধ্যে শামি এবং গনি বিহারের বাসিন্দা। বাকিরা মালদহেই থাকেন।
দুলাল হত্যাকাণ্ডে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘বিহার থেকে কে বা কারা খুনি ভাড়া করে আনছে, সেটা তৃণমূলই ভাল বলতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy