Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ট্রাক-জটের ‘ভূত’ তাড়াতে ওষুধ জরিমানা

সম্প্রতি ট্র্যাফিক ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন করার পরেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে যানজট প্রায় উধাও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করছেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা। কিন্তু কী ভাবে?

সারিবদ্ধ।—ছবি সংগৃহীত।

সারিবদ্ধ।—ছবি সংগৃহীত।

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০১:১২
Share: Save:

হাজারও পুলিশি ব্যবস্থা সত্ত্বেও যানজটের ভূত ছাড়তেই চাইছিল না কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে। মাস কয়েক আগেও যানজট ছিল ওই জাতীয় সড়কের নিত্য দিনের সঙ্গী। এ বার ওঝা হয়ে উঠে সেই যানজটের ভূত ছাড়াল পুলিশই।

কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছিল গত কয়েক বছরে। কলকাতা থেকে দ্রুত জাতীয় সড়কে পৌঁছনোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওই জাতীয় সড়ক নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। তাঁর নির্দেশে সাঁতরাগাছি সেতু-সহ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ট্র্যাফিক ব্যবস্থার ঢালাও পরিবর্তন ও আধুনিকীকরণ করাও হয়েছিল। মেরামত করা হয়েছিল সাঁতরাগাছি সেতুরও। কিন্তু তার পরেও যানজট কমেনি।

কিন্তু সম্প্রতি ট্র্যাফিক ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন করার পরেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে যানজট প্রায় উধাও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করছেন হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা। কিন্তু কী ভাবে?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের মূল সমস্যা ছিল নো এন্ট্রি-র সময়ে সেখানে অজস্র ট্রাক ঢুকে পড়ে অন্য যানবাহনের গতি শ্লথ করে দিত। বিশেষ করে সঙ্কীর্ণ সাঁতরাগাছি সেতু পার করার সময়ে ট্রাক বিকল হয়ে যানজটের ঘটনা ছিল নিত্য দিনের সমস্যা।

হাওড়া সিটি পুলিশের নিয়ম অনুযায়ী, কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা এবং রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ট্রাকের জন্য নো এন্ট্রি নির্ধারিত। তবে এই সময়সীমার আওতায় শালিমার ট্রাক টার্মিনাস থেকে আসা ট্রাকগুলি যুক্ত ছিল না। কারণ ওই ট্রাকগুলির আগাম অনুমতি থাকত।

কলকাতার দিক থেকে সকাল ৮টার পরে ট্রাক ঢোকা বন্ধ হয়ে থাকলেও হাওড়ার দিকে কোনা এক্সপ্রেসের ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগস্থল থেকে ট্রাক ঢুকে পড়ত। অভিযোগ, এক শ্রেণির ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে মাসিক ‘নজরানা’র ব্যবস্থা থাকায় ওই সব ট্রাক ধরা হত না। যার ফলে অফিসের ব্যস্ত সময়ে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যেত। সমস্যায় পড়তেন নিত্যযাত্রীরা। ৮ কিলোমিটার ওই রাস্তার মধ্যে ৬ কিলোমিটার রাস্তাই যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ত। মাঝে মাঝেই পদস্থ পুলিশকর্তাদের পথে নামতে হত যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য।

পুলিশ সূত্রে খবর, রাতেও ঠিক একই ঘটনা ঘটত। রাত ৯টা পর্যন্ত নো এনট্রি থাকলেও তা রাত ৮টা তেই তুলে নেওয়া হত। যার ফলে ট্রাক ও মালবাহী গাড়িগুলি অবাধে ওই রাস্তায় ঢুকে পড়ত। কলকাতার দিক থেকে রাত ৯টার পরে ট্রাক ছাড়া হলেও শেষ রাতে ট্রাকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পরের দিন বেলা পর্যন্ত হ্যাংস্যাং ক্রসিং থেকে যানজট সাঁতরাগাছি সেতু পেরিয়ে যেত। এর প্রভাব পড়ত সারা দিন জুড়ে।

দিনের পর দিন এমনটা চলায় যানজট যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি তা মানছেন হাওড়া সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক কর্তারাও। হাওড়া-কোনা ট্রাফিক গার্ডের ওসি প্রবীর মাহাতো বলেন, ‘‘কোনও ট্রাককেই ‘নো এনট্রির’ সময়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ঢুকলেই ২ হাজার টাকা জরিমানা-সহ অন্যান্য জরিমানা করা হচ্ছে। কড়া ভাবে এই নিয়ম মানায় যানজট নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তার দাবি, নো এন্ট্রির কড়াকড়ি-সহ রাস্তায় নেমে ট্রাফিক পুলিশের অফিসার ও কর্মীরা যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করায় অনেকটা সাফল্য এসেছে। আগে এই ভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হলে যানজটের ভূত থাকত না। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যানজট কমাতে এ ছাড়াও কোনা ট্রাক টার্মিনাসের কাছে ট্রাফিক সিগন্যাল, পুলিশ কর্মী, হাইমাস্ট আলো আরও বাড়ানো হয়েছে। সিমেন্টের ব্লক বাড়ানো হয়েছে। যাতে যানবাহনগুলি নির্দিষ্ট পথে চলাচল করে।

অন্য বিষয়গুলি:

Traffic Police Kona Expressway Traffic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy