দমদম মেট্রো স্টেশনে সব কাুন্টারে টিকিটের দীর্ঘ লািন। —নিজস্ব চিত্র।
নতুন বছরের প্রথম দিনেই দীর্ঘ সময় বিকল থাকল মেট্রোয় টোকেন দেওয়ার ব্যবস্থা। একযোগে মেট্রোর তিনটি লাইনেই (উত্তর-দক্ষিণ, ইস্ট-ওয়েস্ট ও জোকা-তারাতলা) নজিরবিহীন এমন বিপত্তিতে সোমবার ভোগান্তির মুখে পড়েন বহু যাত্রী। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে ওই সমস্যা চলে বলে অভিযোগ।
বছরের প্রথম দিনে মেট্রোয় বেড়াতে বেরোনো অনিয়মিত যাত্রীর সংখ্যাই বেশি ছিল। ফলে স্মার্ট কার্ড চালু থাকলেও তাতে যাত্রীদের বিশেষ সুবিধা হয়নি। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর দমদম, বেলগাছিয়া, দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট, রবীন্দ্র সদন, টালিগঞ্জ ছাড়াও কম-বেশি সব স্টেশনেই টোকেন-বিভ্রাটের জেরে যাত্রীদের কাউন্টারে বহু ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ এক সময়ে কাগজের কার্ডের টিকিট (পেপার কার্ড টিকিট) ব্যবহার করলেও তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। ইস্ট-ওয়েস্ট ও জোকা-তারাতলা মেট্রোর বহু স্টেশনে কাগজের টিকিটের জোগানও ঠিক মতো ছিল না। ফলে সমস্যা বাড়ে। ইস্ট-ওয়েস্টের শিয়ালদহ, করুণাময়ী, সেক্টর ফাইভ স্টেশনেও দেখা দেয় একই বিপত্তি। সেখানে স্মার্ট কার্ড ছাড়াও কিউআর কোড নির্ভর কাগজের টিকিট দেওয়ার ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তবে তাতে খুব অল্প সংখ্যক যাত্রীই নির্ভর করেন বলে মেট্রো সূত্রের খবর।
এ দিন সব চেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয় দমদম স্টেশনে। লোকাল ট্রেন থেকে নেমে মেট্রো ধরতে আসা অনিয়মিত যাত্রী ছাড়াও স্থানীয় যাত্রীদের ভিড়ে স্টেশন চত্বরে কয়েক হাজার লোকের লাইন পড়ে যায়। এক-একটি টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানো লাইনের দৈর্ঘ্য ৭০-৮০ মিটার পর্যন্ত হয়ে যায়। আট-ন’টি কাউন্টার খুলেও পরিস্থিতি সে ভাবে আয়ত্তে আনতে পারেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তবে যাত্রীরা ছুটির মেজাজে থাকায় কেউই তেমন বিক্ষোভ দেখাননি। যদিও যাত্রীদের অনেককে কাগজের টিকিট পেতে দেড়-দু’ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এক যাত্রী জিনিয়া সেন বলেন, ‘‘সকাল ১০টায় পার্ক স্ট্রিটে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। সাড়ে ৯টায় স্টেশনে এসেও টিকিট পেতেই সওয়া ১১টা বেজে গেল। কখন পৌঁছব কে জানে!’’
এ দিন সকাল ৭টায় স্টেশনের বুকিং কাউন্টার খোলার সময়েই মেট্রোকর্মীরা দেখেন, কাউন্টারে যন্ত্র ছাড়াও স্টেশনে বসানো স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন থেকে নির্দিষ্ট তারিখ ও মূল্যের টোকেন বেরোচ্ছে না। স্মার্ট কার্ড চালু থাকলেও টোকেন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচল হয়ে গিয়েছে। তড়িঘড়ি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আধিকারিকেরা কাগজের টিকিটের ব্যবহার শুরু করেন।
মেট্রো সূত্রের খবর, আরএফআইডি প্রযুক্তির সাহায্যে টোকেনগুলিতে দূরত্ব ও মূল্য সংক্রান্ত তথ্য ভরে দেওয়ার সফটওয়্যারে এ দিন বিপত্তি দেখা দেয়। বছর পাল্টে যাওয়ায় সেখানে তারিখ সংক্রান্ত বিপত্তি ঘটে বলে মত মেট্রো আধিকারিকদের একাংশের। সেই খবর পেয়ে ওই ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকা সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেমের (ক্রিস) আধিকারিকেরা কাজে নামেন। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বিবৃতিতে বলেন, ‘‘সফটওয়্যার বিপত্তিতে মেট্রোর তিনটি লাইনেই টোকেন দেওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। সকাল ১০টা ৪২ মিনিট নাগাদ ওই সমস্যা মেটে।’’ যদিও যাত্রীদের মতে, পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হতে বেলা ১২টা বেজে যায়।
এ দিন মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, ২০২৩ সালে কলকাতা মেট্রোরউত্তর-দক্ষিণ শাখা ১৭.৬৯ কোটি যাত্রী বহন করেছে। যা ২০২২সালের তুলনায় ১৪.৯৩ শতাংশ বেশি। যদিও যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, মেট্রো নির্ভরতা বাড়লেও পরিষেবার তেমন উন্নতি হয়নি। বরং মেট্রোর সময়ানুবর্তিতার হাল ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy