বুধেন বর্মণ
ব্রিগেডগামী বিজেপি কর্মীদের উপরে তৃণমূলের হামলা-বিতর্কে তেতে উঠেছিল শাসন এলাকা। সেটা ছিল রবিবারের সকাল। রবিবার রাতে আবার অন্য এক ঘটনার সাক্ষী থাকল সেই শাসনই।
ব্রিগেডের সভা থেকে দলছুট, পথভোলা এক বৃদ্ধ বিজেপি কর্মীকে খাইয়েদাইয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। বৃদ্ধের সঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমবার তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে দিল পুলিশ। তৃণমূলের এমন সৌজন্যের প্রশংসা করেছেন কালিয়াগঞ্জের বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্বের আপ্যায়নে খুশি বৃদ্ধ বুধেন বর্মণও।
ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় যোগ দিতে কালিয়াগঞ্জ থেকে ট্রেনে চেপে এলাকার বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কলকাতায় এসেছিলেন বছর সত্তরের বুধেনবাবু। সভা শেষ হওয়ার পরে কোনও ভাবে দলছুট হয়ে যান তিনি। বিস্তর খোঁজাখুঁজি করেও দলের কাউকে খুঁজে পাননি। শেষ পর্যন্ত অচেনা শহরে হাঁটতে শুরু করেন। রাজারহাট হয়ে অচেনা পথেই চলে কোনও ভাবে চলে আসেন বারাসত ২ ব্লকের শাসন এলাকায়। রাত তখন ৯টা ছাড়িয়েছে।
রাতে শাসন বাজার এলাকায় দিগ্ভ্রান্তের মতো ঘুরছিলেন ওই বৃদ্ধ। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল কর্মীর। তাঁরাই ওই বৃদ্ধের কাছ থেকে ব্রিগেড থেকে দলছুট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। দলের কর্মীরাই খবর দেন শাসনের ফলতি-বেলিয়াঘাটার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মেহেদি হাসানকে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চলে আসেন। বুধেনবাবুকে স্থানীয় একটি খাবারের দোকানে নিয়ে গিয়ে রাতের খাবার খাওয়ান তিনি। তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ারও আশ্বাস দেন মেহেদি হাসান। বৃদ্ধের কাছে ব্রিগেডে আসার জন্য একটি কার্ড ছিল। সেখানে দেওয়া নম্বরে ফোন করে বিজেপি-র কালিয়াগঞ্জের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তাঁরাও খুঁজছিলেন বুধেনবাবুকে।
এর পরে তৃণমূলের কর্মীরাই বৃদ্ধকে শাসন থানায় নিয়ে যান। রাতে থানাতেই তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এ দিন সকালে বৃদ্ধের পরিচিতেরা শাসন থানায় চলে আসেন। উপযুক্ত নথি দেখিয়ে বুধেনবাবুকে ফিরিয়ে নিয়ে যান তাঁরা। পুলিশ পুরো ঘটনার ভিডিয়ো করে রেখেছে। শাসন থানার সামনে দাঁড়িয়ে বুধেনবাবু বলেন, “এই শহরের কিছুই চিনি না। হাঁটতে হাঁটতে এখানে চলে এসেছিলাম। তৃণমূলের কর্মীরাই আমাকে খাইয়ে পুলিশের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন।”
বৃদ্ধকে নিতে এসেছিলেন কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বিজেপি নেতা ভবানীচরণ সিংহ। তিনি বলেন, “এখানকার তৃণমূল কর্মীরাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ওঁদের এই সৌজন্য আমাদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে।” মেহেদি হাসান বললেন, “রাজনৈতিক সৌজন্য তো থাকবেই। এক জন পথভোলা মানুষকে বাড়ি ফেরানো তো আমাদের দায়িত্ব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy