সিদ্ধিদাতা: দক্ষিণ কলকাতার একটি গণেশপুজোর মণ্ডপে। শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
এ যেন দুর্গাপুজোর অ্যাকশন রিপ্লে! রাজ্যে পালাবদলের পরে বাম-শিবির ঘনিষ্ঠ পুজোকর্তাদের সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তৃণমূলের মেজো-সেজো নেতারা। গণেশপুজোর ময়দানেও সেই দখল, পুনর্দখলের খেলা। গত বছরও যেখানে বিজেপি নেতাদের দাপট ছিল, সেখানে এ বার রাজ্যের শাসকেরাই সক্রিয়।
সিদ্ধিদাতা আছেন নিজের মেজাজেই। শুধু ভক্তদলে পরিবর্তন। শুক্রবার বিকেলে কুমোরটুলির শিল্পী বাবু পাল হাসছেন, “গণেশের বায়না ভালই! তবে গেল বার গেরুয়া উত্তরীয়ধারী পুজোকর্তাদের বেশি দেখেছি। তাঁরা উধাও।” কয়েক বছর হল কলকাতার ওজনদার গণেশ হিসাবে নামডাক ছড়িয়েছিল সল্টলেকের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে মৈত্রী সঙ্ঘের পুজোর। সেই পুজোকর্তা, তৃণমূল থেকে বিজেপিভুক্ত সব্যসাচী দত্ত এ বার গণেশপুজোয় নেই। সব্যসাচীর পুজোর ঠাকুর গড়তেন কুমোরটুলির মহিলা শিল্পী কাঞ্চী পাল। তিনি বলছেন, ‘‘কই! দাদা তো গণেশের বায়না দেননি।’’ সব্যসাচীবাবু বলছেন, “তৃণমূল পুজোটা দখল করেছে। আমার স্ত্রীকে সরিয়ে পুজোকর্তা হিসাবে সুজিত বসুর নাম! গোবিন্দার মতো মুম্বইয়ের তারকাদের নিয়ে জলসা, কিছুই হচ্ছে না!” সল্টলেকের স্থানীয় কোঅর্ডিনেটর সুপ্রিয় চক্রবর্তী বা পুজোকর্তা সৈকত ঘোষ দু’জনেই কিন্তু বলছেন, “পুজো ভাল হচ্ছে। কোভিড-বিধির মধ্যে জলসা তো হওয়া উচিতও নয়।” সব্যসাচীবাবু পুজোয় নেই, সেটা ওঁর সমস্যা বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।
রাজ্যে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু মানছেন, “বিজেপি কার্যকর্তাদের (কর্মকর্তা) উৎসাহ কমেছে। রাজ্যে ক্ষমতা দখলের স্বপ্নে গত বার কেন্দ্রীয় নেতাদের আনাগোনা লেগে থাকত।” তবে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহের মতো নেতারা এ বারেও অল্পস্বল্প পুজোয় গিয়েছেন। এ দিন সন্ধ্যায় দিলীপবাবু ঢাকুরিয়ায় যুব মোর্চার নেতার পুজোমণ্ডপে ছিলেন। দমদমে সেন্ট্রাল জেলের কাছে আর এক যুব নেতার পুজোতেও রাজ্যের নেতারা যাচ্ছেন।
বিজেপি নেতাদের কয়েকটি পুজো, শাসক দলের ছিনিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন সায়ন্তনবাবুরা। তৃণমূল নেতাদের পারস্পরিক রেষারেষিতেও শুরু নতুন পুজো। সল্টলেকে ইই ব্লকের নতুন পুজোয় মণ্ডপের বাইরে মা দুর্গার মুখ। পুজোকর্তা তথা স্থানীয় নেতা পার্থ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এখন কিন্তু গণেশপুজোই দুর্গাপুজোর ঘোষণা করে দেয়। রেষারেষি নয়, সবার উৎসাহেই নতুন পুজো হচ্ছে।’’ বিরাট গণেশপুজো হয় মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের বাড়িতে। এ বার তিনি চিকিৎসার জন্য মুম্বইয়ে। কন্যা শ্রেয়া ছোট করে পুজো সারছেন।
কুমোরটুলির কাঞ্চী পাল বলছেন, ‘‘পুজো বেড়েছে। তবে গণেশ ছোট!’’ বাগবাজারের পঞ্জাবি হোটেলের পাশে বা শ্যামপুকুরের গণেশ ১৪ ফুটের অর্ধেক। হরিদেবপুরের অজেয় সংহতি ক্লাবঘরে পুজো করছে। পাড়ার মিষ্টির দোকানেও গণেশের প্রিয় উক্রিচা মোদকের পসরা। বিজেপি নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে ঘুরছে রসিকতা, ভোটে গণেশ উল্টোল বলে পুজোই বন্ধ করলেন ওঁরা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy