টহলদারি। ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিপোয় গোলমালের পরে পথে নেমেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার, হাওড়ার মৌড়িগ্রামে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্যার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি আবার হাওড়া পুরসভার এক মেয়র পারিষদের স্বামী। বৃহস্পতিবার এমনই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার মৌড়িগ্রামের ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিপোয়। পুলিশ সূত্রে খবর, আক্রান্ত ওই ব্যক্তির নাম কার্তিক বাছাড়। তিনি পেশায় ট্যাঙ্কার চালক। ঘটনার পরে গুরুতর আহত অবস্থায় কার্তিকবাবুকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে আইওসি-র পক্ষ থেকে সংস্থার নথিভুক্ত ৯টি পরিবহণ সংস্থাকে আরও একটি করে ট্যাঙ্কার বাড়াবার জন্য বরাত দেওয়া হয়। ওই সময় একটি পরিবহণ সংস্থার পক্ষ থেকে সবক’টি গাড়ি একাই আইওসিকে দিতে চাইলে গোলমাল বাধে। এর প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দেন ৪২টি গাড়ির চালক।
আইওসি সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি সংস্থা ৯টি গাড়ি একাই দিতে চেয়েছিল আইওসিকে। সেই সংস্থাটির মালিক হলেন হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ নাসরিন খাতুনের স্বামী এবং এলাকার ডাকসাইটে এক তৃণমূল নেতা মাসুদ আলম খান ওরফে গুড্ডু। যাঁর নিজেরই ১৮টি ট্যাঙ্কার মৌড়িগ্রামে চলে।
অভিযোগ, এ দিন মৌড়িগ্রাম আইওসির গেটের মুখে চালকরা যখন কর্মবিরতি করছিলেন তখন মোটরবাইকে করে গুড্ডুর লোকজন এলাকায় এসে বিক্ষোভকারী কার্তিকবাবুকে মারধর শুরু করে। কার্তিকবাবু হলেন আবার স্থানীয় থানামাকুয়া তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা ঝর্ণা বাছাড়ের স্বামী। স্বামীকে মারধরের খবর পেয়ে ঝর্ণাদেবী সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এর মধ্যে আশপাশে থাকা চালকদের পরিবারের লোকজনও বেরিয়ে পড়লে আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সকাল ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ইন্ডিয়ান অয়েলের গেটের সামনে পথ অবরোধ শুরু করেন ট্যাঙ্কারের চালক এবং এলাকার বাসিন্দারা।
খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অবরোধ চলার সময় গুড্ডু দলবল নিয়ে আসে। পুলিশের সামনেই বিক্ষোভকারীদের লাঠি দিয়ে মারতে থাকে তারা। মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি ঝর্ণাদেবী নিজেও।
ওই সময়ে আবার কার্তিকবাবুকে কিল, চড়, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। মার খেয়ে রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিক্ষোভকারীদের মারধর প্রসঙ্গে গুড্ডু বলেন, ‘‘আমি কাউকে মারিনি। তবে অবরোধ হটাতে পুলিশকে সাহায্য করেছিলাম অবশ্যই। মৌড়িগ্রাম আইওসিতে কোনও ধরনের অশান্তি আমি বরদাস্ত করবো না।’’
এ দিন হাওড়া হাসপাতালে স্বামীর শয্যার পাশে দাঁড়িয়ে ঝর্ণাদেবী বলেন, ‘‘গুড্ডুদা আমাকে এবং আমার স্বামীকে খুব ভাল করেই চেনেন। তা সত্ত্বেও এ ভাবে মারলেন কেন আমরা বুঝেই উঠতে পারছি না। আমি আমার দলের নেতাদের কাছে এই বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি।
পুলিশের কাছেও এ নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy