প্রতীকী ছবি।
এক প্রসূতিকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় এক যুবক পরিচয় দিয়েছিলেন, তিনি তাঁর স্বামী। শিশুর জন্মের পরে স্বভাবতই হাসপাতালের কর্মী থেকে চিকিৎসকেরা সবাই ওই যুবককেই শিশুর বাবা হিসাবে ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু বেলা গড়াতেই অন্য এক যুবক দাবি করেন যে তিনি ওই সদ্যোজাত শিশুর বাবা। ধন্ধ যখন চরমে তখন আরও এক যুবক এসে দাবি করে বসলেন, তিনিই ওই শিশুর বাবা! তিন দিনে আসা তিন বাবাকে নিয়ে হিমশিম খাওয়া হাসপাতাল শেষে পুলিশের দ্বারস্থ।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। দীপঙ্কর পাল নামে এক ব্যক্তি স্বপ্না মিত্র নামে এক মহিলাকে নিজের স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়ে ভর্তি করেন গাঙ্গুলিবাগানের একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালে। সন্তানসম্ভবা ওই মহিলা রবিবার তাঁর সন্তানের জন্ম দেন। মহিলার সঙ্গে এক জন প্রৌঢ়াও ছিলেন যিনি নিজেকে স্বপ্নার মা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, সন্তানের জন্ম পর্যন্ত সমস্ত ঠিকঠাক ছিল। রবিবার বিকালে হঠাৎই অন্য এক যুবক হাসপাতালে গিয়ে ওই সদ্যোজাতকে দেখতে চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তিনিও নিজেকে ওই শিশুর বাবা বলে পরিচয় দেন। শুনে হকচকিয়ে যান হাসপাতালের কর্মীরা। তাঁরা ওই যুবককে ঢুকতে না দিয়ে পুলিশে খবর দেন। পাশাপাশি গণ্ডগোলের আশঙ্কা থেকে মহিলার কেবিনের সামনে হাসপাতালের দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকে মোতায়েন করেন।
আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে নিয়ে স্ত্রীকে খুন করে টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে, ফাঁসির সাজা তিন জনের
পুলিশ এসে দুই যুবকেরই পরিচয় জানতে চায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরে আসা যুবক নিজের নাম হর্ষ ক্ষেত্রী বলে জানিয়েছেন পুলিশকে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি নিউটাউনে। প্রথম ব্যক্তি, অর্থাৎ দীপঙ্কর পুলিশের সামনে নিজের বিয়ের শংসাপত্রও দেখিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দ্বিতীয় ব্যক্তিও পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনিও বিয়ের সার্টিফিকেট দেখাতে পারবেন।
কিন্তু, এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি রহস্য বাড়িয়েছে ওই মহিলার ভূমিকা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অস্ত্রোপচার করে ওই মহিলার শিশুর জন্ম হয়েছে। মহিলাকে শিশুর বাবা সম্পর্কে প্রশ্ন করলেও তাঁর বয়ান নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট ধোঁয়াশা। রোগীর শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে পুলিশ এখনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি। মহিলার মা বলে পরিচয় দেওয়া প্রৌঢ়াও গোটা রহস্যে কোনও আলোকপাত করতে পারেননি। এরই মধ্যে ফের রহস্য বাড়িয়েছেন তৃতীয় এক যুবক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার বিকেলে প্রদীপ রায় নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে আসেন। তিনিও নিজেকে শিশুর বাবা বলে দাবি করেন। সব মিলিয়ে আতান্তরে হাসপাতাল।
আরও পড়ুন: সন্তান না থাকায় অবসাদ, মিন্টো পার্কে অফিসের আট তলা থেকে নীচে ঝাঁপ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন জন দাবিদারকে দেখে আর্থিক ভাবে যথেষ্ট সঙ্গতি সম্পন্নই মনে হয়েছে। ওই শিশুকন্যার দাবি নিয়ে তিন-তিন জন হাসপাতালে হাজির হওয়ার পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, হর্ষ ক্ষেত্রী নামে এক ব্যক্তি দীপঙ্কর পাল ও প্রদীপ রায় নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ওই দু’জন ভুয়ো কাগজ দেখিয়ে তাঁর সন্তানের পিতৃত্বের অধিকার চাইছে। তবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, গোটা রহস্যের চাবিকাঠি রয়েছে শিশুর মায়ের কাছে। তাঁকে জেরা না করা পর্যন্ত পরিষ্কার হবে না, শিশুর আসল বাবা কে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy