উজ্জ্বল: সুরজিৎ, সুজয় ও রাজ। নিজস্ব চিত্র
ট্যাংরার সঙ্গে টলিউডকে আগেই জুড়েছিল ওরা। এ বার ট্যাংরার বস্তি থেকে সোজা হলিউডের সিনেমায় মুখ দেখাবে তিন কিশোর অভিনেতা— সুজয় মণ্ডল, সুরজিৎ মণ্ডল এবং রাজ সাঁতরা। বিনোদনের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ক্রাইম থ্রিলার ছবি ‘ঢাকা’য় হলিউডের অভিনেতা ক্রিস হেমসওয়ার্থের সঙ্গে এক ফ্রেমে দেখা যাবে ট্যাংরার হাটগাছা বস্তির বাসিন্দা ওই তিন অভিনেতাকে। আগামী মার্চে ছবিটির মুক্তি পাওয়ার কথা।
ভারতীয় এক ব্যবসায়ীর কিশোর ছেলেকে অপহরণের ঘটনা ঘিরে আবর্তিত এই ক্রাইম থ্রিলার ছবিটি পরিচালনা করছেন হলিউডের পরিচালক-অভিনেতা স্যাম হারগ্রেভ। রণদীপ হুডা ও মনোজ বাজপেয়ীর মতো মুম্বইয়ের তারকারাও রয়েছেন এই ছবিতে। ছবির গল্প অনুযায়ী, অপহৃত ওই কিশোরকে উদ্ধার করতে ঢাকায় যেতে হয় হেমসওয়ার্থকে। আর সেখানেই দুষ্কৃতীদলের সদস্য, ট্যাংরার ওই তিন কিশোরের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। হেমসওয়ার্থের সঙ্গে বেশ কয়েকটি মারামারির দৃশ্যেও দেখা যাবে ১৪ বছরের সুজয়-রাজ এবং ১৭ বছরের সুরজিৎকে। গত নভেম্বর থেকে তিন দফায় মুম্বই, আমদাবাদ, ব্যাঙ্ককে ছবির শুটিং করেছে তিন অভিনেতা।
ট্যাংরা থেকে টালিগঞ্জ পেরিয়ে কী ভাবে হলিউডের ছবিতে পৌঁছল এই কিশোরেরা?
আরও পড়ুন: ছবি আঁকার হাত হেলায় কাটত গলাও
কচিকাঁচাদের দিয়ে বাতিল জিনিসে বাদ্যযন্ত্র বানানো নেশা ট্যাংরার বছর আটত্রিশের সঞ্জয় মণ্ডলের। তাঁর দলে কাজের সূত্রেই টিভি চ্যানেলের রিয়্যালিটি শোয়ে হাতেখড়ি হয় সুজয়দের। এর পরে ‘বাবার নাম গাঁধীজি’, ‘আমি জয় চ্যাটার্জি’, ‘লালু’-সহ বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে ফেলেছে সুজয়-সুরজিৎ-রাজ। সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের পড়ুয়াদের তৈরি একাধিক ডিপ্লোমা ছবি এবং স্বল্প দৈর্ঘের ছবিতে অভিনয় করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাদের। সেই সব কাজের সূত্রেই এক দিন তাদের ডাক আসে ওই অনলাইন অ্যাপ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। কয়েক দফা অডিশনের পরে ‘ঢাকা’য় অভিনয়ের জন্য বেছে নেওয়া হয় সুজয়দের।
বেলেঘাটার একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সুরজিৎ। একই স্কুলে সুজয় ও রাজ পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। কারও বাবা-মা নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন, কেউ আবার দিনমজুর।
সঞ্জয়ের দলে কাজের সূত্রে হলিউডের ছবিতে কাজ পেয়ে বেজায় খুশি এই কিশোর অভিনেতারা। সুজয় বলছে, ‘‘আমাদের দল বড় হলে এখানে আরও অনেকের জীবন বদলাবে।’’
সুজয়দের মতো বস্তির বেশ কিছু কিশোর-কিশোরীকে নিয়ে নতুন স্কুল খোলা স্বপ্ন রয়েছে সঞ্জয়ের। দলের ছেলেদের এই ‘হলিউড উড়ানে’ রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তিনি। বলছেন, ‘‘বাংলা ছবি আর সিনেমার পড়ুয়াদের ডিপ্লোমা ছবির হাত ধরে যে এত বড় সুযোগ আসবে, তা ভাবতে পারিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy