তদন্তকারীদের অনুমান, জলি আত্মঘাতী হয়েছেন। —প্রতীকী চিত্র।
এক প্রৌঢ়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর স্বামী ও বছর ২৪-এর মেয়ে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে নরেন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের লস্করপুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম জলি রায় (৫৫)। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। পুলিশের দাবি, তাতে লেখা ছিল, আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। যা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, জলি আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর স্বামী ও মেয়েও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, লস্করপুর এলাকায় বাবার বাড়িতে সপরিবার থাকতেন জলি। তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। বাড়ির অন্য অংশে থাকেন মা মলিনা রায়। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জলির এক বোন ডলি ওই বাড়িতে আসেন। জলির মেয়েই তাঁকে জানান, বাবা-মা সহ তাঁরা তিন জনে ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন। ঘরে ঢুকে ডলি দেখেন, পড়ে রয়েছেন তাঁর দিদি ও জামাইবাবু। দ্রুত এলাকার লোকজনকে ডেকে আনেন তিনি। তিন জনকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জলিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁর স্বামী ও মেয়ের চিকিৎসা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক অনটনের মধ্যে ছিল পরিবারটি। জলির স্বামী এক সময়ে চাকরি করতেন। পরে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে একটি মুদিখানার দোকান খোলেন। কিন্তু, দোকান তেমন না চলায় বন্ধ করে দেন। এর মধ্যে জলি ও তাঁর স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মেয়ে কলেজে ভর্তি হলেও আর্থিক সমস্যায় পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তার পরে কখনও শপিং মলে, কখনও ব্যাঙ্কে কাজ করে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে এক ব্যক্তির নাম লিখে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন ওই দম্পতি। সেখানে লেখা হয়েছে, প্রতারণার জেরে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা।
মলিনা বলেন, “আর্থিক সমস্যা ছিল। জামাই দোকান করতে ঋণও নিয়েছিল। সেই ঋণ শোধ হয়েছিল কিনা, জানি না। মেয়ে-জামাই দু’জনেই অসুস্থ ছিল। মেয়েটা পড়া ছেড়ে সংসার চালাত। জানি না, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল।” ডলি বলেন, “গত রাতেও দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে। জমি নিয়ে আলোচনার জন্য বাড়িতে আসতে বলেছিল। সেই কারণেই আজ এসেছিলাম। দিদির মেয়ে দরজা খোলে। ওকে ঠিক সুস্থ লাগছিল না। জিজ্ঞাসা করায় বলে, সকলে মিলে ঘুমের ওষুধ খেয়েছে। ঘরে গিয়ে দেখি, দিদি-জামাইবাবু পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পাড়ার ছেলেদের ডাকি।”
পুলিশ জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাঁর খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy