চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যামরায়।
তাঁর হাত ধরেই বহু রোগী নতুন জীবন পেয়েছেন। আচমকা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্রেন ডেথ হওয়ার পরে, ওই চিকিৎসকের অঙ্গেই নতুন জীবন পেলেন শহরের তিন রোগী। বুধবার তাঁর কিডনি এবং যকৃৎ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তিন জনের শরীরে। ওই চিকিৎসকের পরিজন-পরিচিতেরা বলছেন, ‘‘মরণোত্তর অঙ্গদানের মধ্যে দিয়েই বেঁচে থাকলেন চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যামরায় (৪১)। এমন ভাবে সকলে এগিয়ে এলে তবেই বহু মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচানো সম্ভব।’’
নিউ টাউনের বাসিন্দা সংযুক্তা পেশায় ছিলেন অ্যানাস্থেশিয়ার চিকিৎসক। শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি কর্মরত ছিলেন। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, গত ৩০ এপ্রিল, শনিবার সকালে শৌচালয় থেকে ফিরে তাঁর স্বামী দেখেন, অসুস্থ বোধ করছেন সংযুক্তা। তড়িঘড়ি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানা যায়, গুরুতর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ওই চিকিৎসক। এর পরে অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। জানা যাচ্ছে, কিছু ক্ষণের জন্য সংযুক্তার হৃদ্যন্ত্র পুরো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাতে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়ে বড় রকম ক্ষতি হয়ে যায়। সোমবার সকালে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, সংযুক্তার ব্রেন ডেথ হচ্ছে। মঙ্গলবার সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে পরিজনদের জানানো হয়। এর পরেই সংযুক্তার স্বামী, পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী অভ্র রায় অঙ্গদানে সম্মতি দেন। বুধবার ভোর থেকে শুরু হয় অঙ্গ তোলা এবং সংরক্ষণের কাজ। তার পরে তা চলে যায় প্রতিস্থাপনের জন্য।
ওই চিকিৎসকের যকৃৎ পেয়েছেন অ্যাপোলোর ৬১ বছরের এক রোগী। একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এসএসকেএমের এক যুবকের শরীরে। আর একটি কিডনি পেয়েছেন দমদম আইএলএস হাসপাতালের এক প্রৌঢ়া। ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’ (রোটো)-এর যুগ্ম অধিকর্তা, চিকিৎসক অর্পিতা রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এক জন চিকিৎসকের মরণোত্তর অঙ্গদান আরও মানুষের মনে সচেতনতা তৈরি করবে বলে মনে করি। অঙ্গদানে ধর্ম বা কুসংস্কার কোনও বাধা হতে পারে না। পাশাপাশি সকলকে বুঝতে হবে, ব্রেন ডেথের পরে রোগীর অঙ্গ বাঁচাতে পারে আর এক জনকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy