ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন স্বপ্না কুণ্ডু। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
বাগুইআটির দেশবন্ধু নগরের মতো জনবহুল এলাকায় ছুটির সন্ধ্যায় যে ডাকাতেরা হামলা চালাতে পারে, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও তা বিশ্বাস করতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্র পেতে আক্রান্ত মহিলার মোবাইলের কল লিস্ট দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ছাপাখানার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কার্তিক কুণ্ডুর তিনতলা বাড়ি দেশবন্ধু নগর ডাকঘরের উল্টো দিকের গলিতে। সেখানেই রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ তিন দুষ্কৃতী হানা দিয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছেন কার্তিকের স্ত্রী স্বপ্না। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, সে সময়ে তিনি একা ছিলেন। ভাইঝি রিমা কুণ্ডু পড়তে বেরোনোর দশ মিনিটের মধ্যে বেলের আওয়াজে দরজা খোলেন স্বপ্না। ভেবেছিলেন, স্বামী বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু দরজা খোলা মাত্র তিন দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে। দুষ্কৃতীদের মাথায় হেলমেট, হাতে দস্তানা ও ছোরা ছিল।
সোমবার স্বপ্না বলেন, ‘‘ডাকাতেরা ধাক্কা দিয়ে আমাকে সোফায় ফেলে দিল। ওঠার চেষ্টা করলে মাটিতে ফেলে দেয়। এক জন ছোরা ঠেকিয়ে বলে, তোদের বাড়িতে অনেক টাকা আছে। সেগুলো কোথায়?’’ এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই বললেও দুষ্কৃতীরা শোনেনি। পাশের একটি ঘরে ছাপার কাগজ ছিল। স্বপ্না জানান, তাঁকে টানতে টানতে সেই ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে দু’জনে মুখ চেপে ধরে। সেই কাজে গামছাও ব্যবহার করা হয়। স্বপ্না বলেন, ‘‘মুখ চেপে ধরায় প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছিল। তখন দুষ্কৃতীদের এক জন ইশারায় জল দিতে বলল।’’ জল খাওয়ার পরে সোনার গয়না কোথায় আছে, জানতে চায় দুষ্কৃতীরা। সিঁড়ি দিয়ে দোতলার ঘরে ওঠে আলমারি খুলে সব গয়না বার করে দেন স্বপ্না।
স্বপ্নাদের প্রতিবেশী সীমা সাহা বলেন, ‘‘একেবারে লাগোয়া বাড়ি আমাদের। দুষ্কৃতীরা এ ভাবে লুঠপাট করল আর কিছু জানতে পারলাম না?’’ বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, সন্ধ্যায় দেশবন্ধু নগরের ওই রাস্তায় মানুষজনের ভিড় থাকে। গলি থেকে বেরোলে পরপর দোকান। এমন জনবহুল এলাকায় ডাকাত-দল হানা দিলে সুনসান এলাকায় কী হবে?
পুলিশ জানিয়েছে, বছর পঞ্চাশের স্বপ্নার বয়ান বেশ কিছু জায়গায় অস্পষ্ট। ক’জনের মাথায় হেলমেট ছিল, ভয় দেখাতে কী কী করা হয়েছে, সে নিয়ে তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, মহিলা আতঙ্কে রয়েছেন, সে কারণেও এটা হতে পারে। পরিচিত কেউ জড়িত থাকার সম্ভাবনা রবিবারই অনুমান করেছিল পুলিশ। সব সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে মোবাইলের কল লিস্টের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনেও নজর রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy