তপোব্রত রায়। —ফাইল ছবি।
পুলিশের তরফে ক্ষমা চাওয়ার দাবি থেকে কি সরে এলেন পুরসভার চিকিৎসকেরা? শনিবার পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কোনও চিকিৎসকের মুখে শোনা যায়নি পুলিশের তরফে ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ। অথচ, মঙ্গলবার পুজোর কার্নিভালে ‘প্রতীকী অনশনকারী’র ব্যাজ পড়ে ডিউটিতে যোগদান করায় পুরসভার চিকিৎসক তপোব্রত রায়কে গ্রেফতার করে পরে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনার পরেই এমনই দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার কলকাতা পুরসভায় স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশকে তপোব্রতের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে সরব হয়েছিলেন। শুক্রবার দুপুরেই সেই সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, পুলিশের ক্ষমা চাওয়ার বিষয় নিয়ে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি পুরসভার চিকিৎসকদের থেকে। পুরসভার চিকিৎসক মহল সূত্রে খবর, বুধবার যে ডেপুটেশনটি পুরসভায় জমা দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা, তার কপিতে পুলিশের ক্ষমা চাওয়ার উল্লেখ ছিল না। এমনকি, শনিবারের বৈঠকেও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরীর কাছেও এমন কোনও দাবির উল্লেখ করেননি তাঁরা।
বরং তপোব্রতকে আইনী সহায়তা দেওয়ার দাবি নিয়ে পুরসভার দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা পুরসভায় কর্মরত চিকিৎসকেরা। শনিবার পুরসভার ছুটির দিন হলেও, এসেছিলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। দুপুরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কর্মরত চিকিৎসকেরা। সেই প্রতিনিধি দলে ছিলেন চিকিৎসক তপোব্রতও। পুরসভায় এসেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ঘরের সামনে জিবি বৈঠক করেন। তার পরেই তাঁরা যান স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক হয়। কিন্তু, সেই বৈঠকে চিকিৎসকেরা কোনও আশ্বাস পাননি বলেই কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। তবে বৈঠকে তপোব্রত ওই দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিককে।
বৈঠক শেষে চিকিৎসকদের তরফে দ্বৈপায়ন মজুমদার বলেন, ‘‘তপোব্রতের কেসে কী কী হয়েছে, সে বিষয়ে কথা হয়েছে। যে হেতু এটা অভ্যন্তরীণ বৈঠক, তাই এখনই কিছু বলা উচিত হবে না। আমরা যে বিষয়টি নিয়ে কনসার্নড যে, এক জন অন ডিউটি অফিসারের সঙ্গে কী কী ঘটেছে, কেন ঘটেছে?’’ পুরসভা কি দাবি মানা নিয়ে কোনও আশ্বাস দিয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে দ্বৈপায়ন আরও বলেন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন। তাই সব বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না। আর দাবি মানা হবে কি হবে না, তা বলার জায়গায় আমরা নেই। এই দায়িত্ব পুরসভার, তাই সহায়তা দেওয়া হবে কি হবে না, তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।’’
রেড রোডের কার্নিভালের অনুষ্ঠান থেকেই পুরসভার চিকিৎসক তপোব্রতকে আটক করে কলকাতা পুলিশ। তাঁকে ময়দান থানায় নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়। এই ঘটনায় পুরসভায় কর্মরত চিকিৎসকেরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। পরদিনই পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে বেশ কিছু দাবি রাখেন তাঁরা। সেই দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল— পুলিশকে তপোব্রতের কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি দুঃখপ্রকাশ না করা হয়, তা হলে তাঁরা আইনি পদক্ষেপ নেবেন। সে ক্ষেত্রে পুরসভার চিকিৎসক যে হেতু অপমানিত হয়েছেন, তাই পুরসভাকেই আইনি সহায়তা দিতে হবে। কিন্তু, শনিবার পুলিশের ক্ষমা চাওয়া প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া তাঁরা দেননি। বরং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে বলেই জানিয়েছেন বৈঠকে হাজির চিকিৎসকেরা।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, আগামী সোমবার পুরসভায় কর্মরত চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠক করবেন ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। তবে তাঁর সঙ্গে পুরসভার মেয়র কিংবা ডেপুটি মেয়র কোনও যোগাযোগ করেননি জানিয়ে তপোব্রত বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কোনও কথা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy