যুবভারতীর সামনে প্রতিবাদ সিনিয়র ডাক্তারদের। রয়েছেন সুবর্ণ গোস্বামীও (একদম ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
মাঠের লড়াই ভুলিয়ে দিয়েছিল আরজি করের ঘটনা। চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে এক সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা। শনিবার যুবভারতীতে আইএসএলের ম্যাচে মোহন-ইস্ট দ্বৈরথ শুরু হওয়ার আগে প্রতিবাদের সেই যৌথবদ্ধ ছবি ফের ধরা পড়বে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। প্রতিবাদের সেই ছবি ধরা পড়লও। তবে স্থানীয়দের একাংশের কথায়, এ বার প্রতিবাদ তেমন জমল না। গত অগস্ট মাসে ডার্বি বাতিল পরবর্তী প্রতিবাদকে মাথায় রাখলে এই বৈপরীত্যটা চোখে পড়তে বাধ্য।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে একাধিক কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। উল্টোডাঙা থেকে হাডকো মোড় পর্যন্ত ‘মানববন্ধন’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। অনুরূপ কর্মসূচি ছিল রুবি মোড় থেকে বেলেঘাটা বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত। যুবভারতীর সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরাও। খেলা শুরু আধ ঘণ্টা আগে অবশ্য দেখা গেল রুবি মোড়র ‘মানববন্ধন’ কর্মসূচিতে জনা দেড়শো লোক জড়ো হয়েছেন। লোকবলের অভাবেই পরিকল্পনা মোতাবেক কর্মসূচিটি যুবভারতী অবধি নিয়ে যাওয়া যায়নি বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।
উল্টোডাঙায় অবশ্য মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের কয়েক জন সমর্থককে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। সেখানে দুই দলের পতাকা নিয়ে কমবেশি ৫০ জন জড়ো হয়েছিলেন। বাইপাসের ধারে কয়েকটি ম্যাটাডরে কয়েক জন সমর্থককে ‘বিচার চাই’ শিরোনাম-সহ ব্যানার এবং টিফো হাতে দেখা যায়।
তবে সাময়িক উত্তেজনার সূত্রপাত হয় যুবভারতীর ভিআইপি গেটের সামনে। সেখানে প্রতিবাদ জানাতে দাঁড়িয়েছিলেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী এবং আরও কয়েক জন সিনিয়র চিকিৎসক। অভিযোগ, সেখানে কয়েক জন যুবক ঢুকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। ‘মানববন্ধন’ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পাল্টা ‘বিচার চাই’ স্লোগানও ওঠে। এক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, “আমরা জাস্টিস চাই স্লোগান দিচ্ছিলাম। কয়েক জন ভিতরে ঢুকে পড়়ে। যাঁরা বিচার চান না, তাঁরাই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন।”
আরজি কর-কাণ্ডের আবহে গত ১৮ অগস্ট যুবভারতীতেই বাতিল হয়েছিল মোহন-ইস্ট ডার্বি। সেটি অবশ্য ছিল ডুরান্ড কাপের ম্যাচ। তার পরে আরজি কর-কাণ্ডে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ন্যায়বিচার চেয়ে মিছিল করে যুবভারতীর উদ্দেশে যান দুই দলের সমর্থকেরা। পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয় সমর্থকদের একাংশের। কয়েক জনকে আটক করেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তার পরেও অবশ্য একাধিক ম্যাচে ‘বিচার চাই’ স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, টিফো হাতে গ্যালারিতে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে সমর্থকেদের। উঠেছে ‘আমাদের বোনের জন্য বিচার চাই’ স্লোগানও।
সেই সময় ডার্বি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছিল। শহরের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেই সময় বিধাননগর পুলিশের তরফে অবশ্য যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, বিভিন্ন জায়গায় এত পরিমাণে পুলিশকর্মী দেওয়া হয়েছে যে, ডার্বির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy