ফাইল চিত্র।
পথে নেমে ট্র্যাফিক-বিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো পুলিশকর্মীর অভাবের কারণেই কি বাড়ছে পথ দুর্ঘটনা? কয়েক বছর ধরে ট্র্যাফিক পুলিশে তেমন নিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে এই প্রশ্নটা তুলতেন অনেকেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ‘বুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (বিপিআরডি)-এর একটি রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়ার পরে সেই প্রশ্নটিই আশঙ্কার চেহারা নিয়েছে। ওই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, এ রাজ্যে মোতায়েন থাকা বাহিনীর তুলনায় ফাঁকা পদের সংখ্যা বেশি। দেশের মধ্যে ট্র্যাফিক পুলিশ বিভাগে শূন্য পদের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (৫১ শতাংশ)!
‘ডেটা অন পুলিশ অর্গানাইজেশন্স ২০২১’ নামে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দেশে ট্র্যাফিক পুলিশে শূন্য পদের পরিমাণ ২৯ শতাংশ। সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের পরে নাম রয়েছে রয়েছে গুজরাত (৮৯ শতাংশ) এবং মধ্যপ্রদেশের (৪৪ শতাংশ)। তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪৩ শতাংশ), মহারাষ্ট্র (৩৩ শতাংশ), কর্নাটক (২০ শতাংশ), তামিলনাড়ু (১৫ শতাংশ) এবং দিল্লিও (১২ শতাংশ)। পশ্চিমবঙ্গে ১২,০০৬ জন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী থাকার কথা, যদিও বাস্তবে রয়েছেন মাত্র ৫,৯৯১ জন। শূন্য পদ ৬,০৯৫টি। অর্থাৎ, অর্ধেকেরও বেশি পদ খালি।
ওই রিপোর্টে দেওয়া পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে দেশে মারা গিয়েছেন ১,৩১,৭১৪ জন। আহতের সংখ্যা ৩,৪৮,২৭৯। দুর্ঘটনার সংখ্যা ৩,৬৬,১৩৮টি, যার মধ্যে বেশির ভাগই অতিরিক্ত গতির কারণে। এর পরে রয়েছে ভুল পথে গাড়ি চালানো, মোবাইলে কথা বলতে বলতে এবং মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর মতো কারণ। অনেকের দাবি, ‘‘২০২০-এ দেশ জুড়ে লকডাউন ছিল কিছু দিন। লকডাউন উঠে যাওয়ার পরের এবং ২০২১ সালের হিসাব ধরলে এমন দুর্ঘটনার সংখ্যা হয়তো আরও বেশি। এই রিপোর্ট যেমন দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং কারণ নিয়ে ভয় ধরাচ্ছে, তেমনই পথে পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী না থাকা নিয়েও চিন্তা বাড়াচ্ছে। তা হলে পথ দুর্ঘটনা রুখবেন কারা? বিধি ভাঙলে কড়া হাতে সামাল দেবেন কারা?’’
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ডিসি সুনীলকুমার যাদব অবশ্য বললেন, ‘‘করোনার জন্য নিয়োগে কিছু দিন সমস্যা হয়েছে ঠিকই, তবে এখন নিয়োগের সব ব্যাপার স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। রাজ্য পুলিশে প্রায়ই নিয়োগ হয়। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশেও নিয়োগ হচ্ছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশে তেমন কোনও ঘাটতি নেই। যে সংখ্যক কর্মী রয়েছেন, তা দিয়ে প্রতিদিন ভাল ভাবেই কাজসামলানো হচ্ছে।’’
তবে কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে শহরে ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডে ইনস্পেক্টরের সংখ্যা ৭০। সার্জেন্ট আছেন ৪৫০ জন। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার ২০ জন এবং ডেপুটি কমিশনার ৪ জন। অর্থাৎ, কাজ চালাতেহচ্ছে সর্বসাকুল্যে ৫৫০ জনকে নিয়ে।
পুলিশের বড় কর্তাদের যদিও দাবি, এ ছাড়াও রয়েছেন কনস্টেবল, হোম গার্ড এবং সিভিক পুলিশকর্মী। ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের লকডাউন-অধ্যায় পর্যন্ত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী নিয়োগ না হলেও প্রচুর সিভিক পুলিশকর্মী নিয়ে কাজ নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে। তাঁদের ধরলে ট্র্যাফিক পুলিশের লোকসংখ্যা সাড়ে চার হাজার।
কিন্তু তাতেও কাজ হয় কি? দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অবশ্য অন্য কথাই বলছে— এমনটাই দাবি করেছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy